গাজ়া ভূখণ্ডে খাবার নেই, পানি নেই, অনাহারে মৃতপ্রায় শিশুরা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 23-06-2024

গাজ়া ভূখণ্ডে খাবার নেই, পানি নেই, অনাহারে মৃতপ্রায় শিশুরা

গাজ়া ভূখণ্ডে নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আজও অন্তত ৪২ জন প্যালেস্টাইনি গাজ়া শহরের শাটি শরণার্থী শিবির ও টুফাতে ইজ়রায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও এই মৃত্যু-খতিয়ান অনেকাংশেই অনুমান-ভিত্তিক। আসল মৃত্যু-সংখ্যা হয়তো এর অনেক বেশি। আর তা শুধু ইজ়রায়েলি বোমায় নয়, না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। বিশেষ করে শিশুরা। গাজ়ার হাসপাতালগুলিতে (যে ক’টি এখনও চলছে) অপুষ্টিতে মৃতপ্রায় শিশুর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে।

রাষ্ট্রপুঞ্জ দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করে চলেছে, এই দীর্ঘ যুদ্ধ ও ধ্বংসলীলা অচিরেই দুর্ভিক্ষ ও মহামারি ডেকে আনবে। সে দিকেই ক্রমশ এগোচ্ছে গাজ়া। খাবার নেই, পরিস্রুত পানীয় জল নেই। সমাজমাধ্যমে ভেসে উঠেছে অসংখ্য ভিডিয়ো। এমনই এক ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, একটি সাত বছরের শিশু বলছে, সে মরে যেতে চায়। কেন জানতে চাওয়ায় তার জবাব, ‘‘খাবার নেই। জল নেই। মা-বাবাও বেঁচে নেই। আমি মরে যেতে চাই।’’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রাতের পর রাত ঘুম নেই। ভয় করলে জড়িয়ে ধরার জন্য প্রিয়জন নেই। চারপাশে শুধু মৃত্যু। এ সব দেখে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে অসংখ্য শিশু। রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমান, জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে গাজ়ায় ৫ লক্ষেরও বেশি প্যালেস্টাইনি অনাহারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। কারণ ইজ়রায়েল ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে না, ফলে খাদ্যাভাব সীমা ছাড়াচ্ছে।

গাজ়ার বাসিন্দা সাবের আহমেদ সিওয়েল বলেন, ‘‘সারাদিনে কোনও মতে একটা রুটি জুটছে। শুধু ওই খেয়েই কাটানো। সঙ্গে আর কোনও খাবার নেই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রোজগার নেই। আর যদি অর্থ থাকতও, কেনার জন্য তো কিছু নেই। একবেলা ভাল করে খাব, তার উপায় নেই এখন। আমি, আমার বাচ্চারা ওই রুটি খেয়েই দিন কাটাচ্ছি। দিনে একবারই খাই।’

সাবেরের বাড়ি উত্তর গাজ়ার বেট লাহিয়ায়। পরিবারে সদস্য সংখ্যা ১১। অতগুলো পেটে খাবার জোগানো অসম্ভব হয়ে উঠছে। সাবেরের আকুতি, ইজ়রায়েলের বোমার হাত থেকে বাঁচলেও খিদের জ্বালায় হয়তো সন্তানরা আর বাঁচবে না। বললেন, ‘‘একটু জল পর্যন্ত নেই বাড়িতে।’

শিক্ষাব্যবস্থাও অকেজো। বছরের এই সময়ে ৩৯ হাজার হাই স্কুল পড়ুয়ার ‘তাওজিহি’ (বোর্ডের পরীক্ষা) দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন সে সব ভাবনার বাইরে। যুদ্ধ কবে শেষ হবে, সেই আশায় পথে চেয়ে পড়ুয়ারা। বেট হানুনের বাসিন্দা আল-জ়ানিন বলে, ‘‘যুদ্ধ শুরুর আগে পড়াশোনা করতাম। খুব মন দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। বাবা-মা আলাদা করে গৃহশিক্ষক রেখেছিল।’’ যুদ্ধে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আল-জ়ানিনের স্কুলও আর নেই। সে বলে, ‘‘আমাদের কোনও ভবিষ্যৎ নেই। পড়াশোনা বন্ধ। আমি হাল ছাড়তে রাজি নই। আমি নিজেই পড়াশোনা করছি। একটা স্কুলে শরার্থী শিবির হয়েছে। আমরা এখন সেখানে থাকি। সেখানেই পড়াশোনা করছি।’’


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]