হিটস্ট্রোকের লক্ষণ বুঝলেই সবার আগে যা করণীয়


ফারহানা জেরিন , আপডেট করা হয়েছে : 23-06-2024

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ বুঝলেই সবার আগে যা করণীয়

বর্ষাকাল শুরু হয়ে গেলেও বাইরে এখনও সূর্যের তীব্র তাপ। আর এই গরমে অনেকেই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন । অনেকে মারাও যাচ্ছে। সাধারণত বৃদ্ধ ও শিশুরা হিট স্ট্রোকে বেশি আক্রান্ত হয়। কিন্তু আমাদের অজ্ঞতার কারণে অনেক প্রাণ অকালে চলে যাচ্ছে । তবে একটু সচেতন হলেই আমাদের চোখের সামনে অনেক জীবন বাঁচাতে পারে।

আমদের শরীর নিজেই তাপ উৎপন্ন করে থাকে । এই তাপ আবার ঘাম ও শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

হিটস্ট্রোক এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। শরীর থেকে তাপ অপসারণের প্রক্রিয়াগুলি কাজ করে না, যেমন ঘামের অনুপস্থিতি অর্থাৎ ঘাম হবে না । ফলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক গুন বাড়তে থাকে।

মস্তিষ্কের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়।

আর এই সময় হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত্র ব্যক্তির অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে চোখের পলকে মৃত্যু ঘটতে পারে। যারা রোদে অনেক ঘোরাফেরা করেন এবং বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয় ,তাই এই সময় খুব সাবধানে বাড়ি থেকে বের হতে হবে ।

কি করে বুঝবেন কেও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত্র হলে ?

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হিট স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা গেলেও অনেক সময় দেখা যায় না বা আমরা বুঝতে পারি না । এই উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে শরীরের তাপমাত্রার অত্যধিক বৃদ্ধি, ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া যার ফলে শরীর লাল হয়ে যায়, দ্রুত হৃদস্পন্দন, শ্বাসকষ্ট, আচরণে পরিবর্তন যেমন হঠাৎ রেগে যাওয়া, অস্থির বোধ করা, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা না থাকা, মোচড়ানো এবং হতে পারে। এছাড়াও অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ বুঝলেই সবার আগে যা করণীয় ?

হিটস্ট্রোকের প্রথম এবং প্রধান চিকিৎসা হল আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা কমানো। তাই কোনো উপসর্গ দেখা মাত্রই আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোদ থেকে সরিয়ে ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।

শরীরের কাপড় যথাসম্ভব খুলে ফেলতে হবে এবং শরীরে ঠাণ্ডা জল ঢালতে হবে, তবে বরফের ঠাণ্ডা জল ঢালা উচিত নয় কারণ এতে রক্তনালীগুলো সংকুচিত হবে এবং শরীরের তাপমাত্রা কমার পরিবর্তে বেড়ে যাবে। রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে।

রোগীকে বাতাস করতে হবে। কুচকি ও বগলের নিচে আইস প্যাক রাখলে তাপমাত্রা দ্রুত কমে আসবে।

হিটস্ট্রোক থেকে নিজেকে রক্ষা করতে, রোদে বাইরে ঘোরাঘুরি করা বা রোদে লাগাতার অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত নয়।

প্রচুর জল , সিরাপ, স্যালাইন এবং তরল পান করুন।

গ্রীষ্মকালে আপনার কম অ্যালকোহল, চা এবং কফি পান করা উচিত কারণ তারা ডিহাইড্রেশনের মাধ্যমে হিটস্ট্রোককে ট্রিগার করে।

মূত্রবর্ধক যেমন ফ্রুসেমাইড, স্পিরুলিনা ল্যাকটোন, ম্যানিটল শরীর থেকে জল সরিয়ে এবং আপনাকে ডিহাইড্রেট করে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করতে পারে। তাই এই ওষুধগুলি খাওয়ার বিষয়ে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। গরমের সময় বেশি করে লবণাক্ত জল খেতে হবে।

বেশিক্ষণ রোদে থাকবে না। মাঝে মধ্যে রুমাল ভিজিয়ে গলা ও মুখে দিন। বাইরে রোদে চশমা , ওড়না ও টুপি ব্যবহার করুন। এর সাথে ছাতা ব্যবহার করতে হবে।

গরমে সুতি ও হালকা রঙের পোশাক পরুন। কারণ, সাদা কাপড়ে তাপ প্রয়োগ করলে তা আবার প্রতিফলিত হয় এবং তাই শরীরের তাপমাত্রা কম থাকে।

কিন্তু রঙিন কাপড় পরলে তাপ শোষণ করে এবং শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে ।

শিশুদের হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা কম। শিশুদের হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা করার জন্য যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। তাই তাদের বেশি করে জল ও অন্যান্য তরল খাবার দিতে হবে। তারা যেন রোদে না খেলা করে সেই দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]