এক অভিনব 'যুদ্ধাস্ত্র'! একের পর এক আবর্জনা বহনকারী বেলুন দক্ষিণ কোরিয়ায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে উত্তর কোরিয়া। রবিবার দক্ষিণ কোরিয়া জানাল, বর্জ্য বয়ে নিয়ে আসা প্রায় ৬০০ বেলুন সেদেশে পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ দাবি করেছে, স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে এরকমই প্রায় ৬০০ বেলুন সেদেশে উদ্দেশে উড়িয়ে দেয় উত্তর কোরিয়া।
ওই বেলুনগুলিতে যে বস্তা বাঁধা রয়েছে, তাতে ভর্তি রয়েছে সিগারেটের বাট, ফ্যাব্রিক, কাগজ এবং প্লাস্টিকের বর্জ্য। যেগুলি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী এই বেলুনগুলির উৎসস্থল নিশ্চিত করেছে। এগুলির গতিবিধির উপর ধারাবাহিক নজরদারি চালানো হচ্ছে। বেলুনগুলি কোথা থেকে আসছে এবং সেগুলি কোথায় গিয়ে পড়ছে, তা সঠিক ভাবে শনাক্ত করার জন্য বায়বীয় নজরদারি চলছে। জানা গিয়েছে, পিয়ংইয়ং সীমান্তের ওপারে যাঁরা উত্তর কোরিয়া বিরোধী লিফলেট ছড়াচ্ছেন, তাঁদের শায়েস্তা করতেই এ ধরনের কৌশল নিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
বেশ কয়েক দিন ধরেই এ ধরনের আবর্জনা আক্রমণ চলছে। গত বুধবারেও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে একই ঘটনা ঘটে। সেবারও আবর্জনা এবং মলমূত্র ভরা কয়েকশো বেলুন উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। যেটাকে তারা 'আন্তরিকতার উপহার' হিসাবে অভিহিত করা হয়েছিল।
তবে, দক্ষিণ কোরিয়া এই বিষয়টিকে মোটেই হালকা ভাবে নিচ্ছে না। তাদের মতে, এ ধরনের কাজকর্ম উস্কানিমূলক এবং বিপজ্জনক। পাশাপাশি বেশকিছু পদক্ষেপও নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তর গেয়াংসাং এবং গাংওয়ান প্রদেশের পাশাপাশি সিউলের কিছু এলাকায় এ ব্যাপারে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবর্জনা ভর্তি বেলুন যাতে গায়ে এসে না পড়ে, তার জন্য সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে নাগরিকদের উদ্দেশে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের স্ট্যান্ডিং কমিটি রবিবার বিকেলে একটি বৈঠকেও বসতে চলেছে। আবর্জনা ভর্তি বেলুন থেকে দূরে থাকতে জনসাধারণের উদ্দেশে মাইকিং করার কথাও চিন্তাভাবনায় রয়েছে কমিটির।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক অতীতে সীমান্ত লাগোয়া এলাকার মানুষকে সতর্ক করতে প্রায়শই বিভিন্ন ধরনের সতর্কতামূলক প্রচার করত দক্ষিণ কোরিয়া। তবে ২০১৮ সালে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে শান্তি-বৈঠকের পর সেই প্রচার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে, এখন আবর্জনা আক্রমণে আবারও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেল!