'মাউন্টেইন ডিউ' খাইয়ে খাইয়ে ৪ বছরের মেয়েকে হত্যা করল মা!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 26-05-2024

'মাউন্টেইন ডিউ' খাইয়ে খাইয়ে ৪ বছরের মেয়েকে হত্যা করল মা!

সফটড্রিঙ্ক হিসেবে অনেকেরই পছন্দ মাউন্টেইন ডিউ। প্রবল গরমে অনেকেই তৃষ্ণা মেটাতে নিওন-সবুজ রঙের চিনি ও সোডা মিশ্রিত এই পানীয় সেবন করেন তারা। কিন্তু এই পানীয়ই বিষ হয়ে দাঁড়াল ৪ বছরের ছোট্ট মেয়েটার জন্য। পুঁচকে মেয়েটাকে শুধুই মাউন্টেইন ডিউ খাওয়াতো তার মা। বেবি ফুড পাউডার গুলে দিত মাউন্টেইন ডিউয়ের সঙ্গে।

দীর্ঘদিন ধরে এই খাদ্যাভ্যাসে থাকতে থাকতে ২০২২-এর জানুয়ারিতে, ডায়াবেটিস এবং দাঁতের গুরুতর ক্ষয়জনিত ব্যাধীতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল শিশুটির। শুক্রবার (২৪ মে), শিশুটিকে হত্যার দায়ে তার মাকে, নয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

ঘটনাটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহায়ো প্রদেশের সিনসিনাটি শহরের। নিউইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলার নাম তামারা ব্যাঙ্কস। ৪ বছরের শিশু-কন্যা কার্মিটি হোয়েবকে সে প্রধাণত মাউন্টেইন ডিউ খাইয়ে রাখত বলে অভিযোগ। আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, অনেক সময় মাউন্টেইন ডিউয়ের মধ্যে বেবি ফুড মিশিয়ে দিত তামারা। এভাবেই চলছিল। কিন্তু, ২০২২-এর জানুয়ারিতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে কার্মিটি। যত দিন যাচ্ছিল, ততই তার অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। তবু, তাকে কোনও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়নি তামারা।

শেষে একদিন, কার্মিটির শ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। গোটা শরীর নীল হয়ে গিয়েছিল। এরপর বাধ্য হয়ে জরুরী পরিষেবা বিভাগে ফোন করেছিল তামারা। জরুরী পরিষেবা বিভাগের কর্মীরা এসে দেখেছিলেন, শিশুটি প্রায় মৃত। তবু প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে কিছুক্ষণের বাঁচিয়ে তুলেছিলেন তাঁরা। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা স্ক্যান করে দেখেছিলেন, সে ইতিমধ্যেই ব্রেন ডেড। অর্থাৎ, তার মস্তিষ্ক মৃত। ময়নাতদন্তে দেখা যায়, ডায়াবেটিস থেকেই তার মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়েছিল। যার জেরেই তার মৃত্যু হয়। শুধু তাই নয়, মৃত্যুর সময় মেয়েটির অনেক দাঁতও পুরো ক্ষয়ে গিয়েছিল।

আসলে, মাউন্টেইন ডিউতে চিনির মাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা সফট ড্রিঙ্কে সর্বোচ্চ ২৪ গ্রাম চিনি দেওয়ার সুপারিশ করেন। কিন্তু মাউন্টেই ডিউতে ৭৭ গ্রাম চিনি থাকে। নিয়মিত কার্মিটিকে, এই চিনিযুক্ত পানীয় খাওয়ানোর ফলেই তার দাঁত ক্ষয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার বাবা-মা তাকে কখনই ডেন্টিস্টের কাছেও নিয়ে যায়নি। কার্মিটের বাবা, ক্রিস্টোফার হোয়েব-কেও ‘অনিচ্ছাকৃত হত্যা’র দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে, তার সাজা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

ওহায়ো পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, ক্রিস্টোফার বোয়ব এবং তামারা ব্যাঙ্কসের আরও সন্তান রয়েছে। তারা এখন প্রাপ্ত বয়স্ক। তারাও এই বাবা-মায়ের অবহেলার শিকার হয়েছিল। তাদের এক ছেলেও ৪ বছর বয়সে কোমায় চলে গিয়েছিল। জানা গিয়েছিল, ডায়াবেটিস থেকেই তার ওই অবস্থা হয়েছিল। শুক্রবার শুনানির সময় মার্কিন বিচারক বলেছেন, “খুব ভাল বাবা-মা হওয়া কঠিন। কিন্তু প্রত্যেকেরই কাছ থেকেই আশা করা হয়, অন্তত মাঝারি মানের বাবা-মা হবেন তারা। বাবা-মা হিসেবে কী করতে হবে, তা জানা নেই, এটা কোনও অজুহাত হতে পারে না।”


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]