রাজশাহী নগরীতে পুলিশের উপস্থিতিতে বাড়িতে ভাংচুরের ঘটনায় ভুক্তভোগী নূরভানু কাটাখালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় শুক্রবার অভিযোগের তদন্তে সরেজমিনে যান কাটাখালি থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই টিএম সেলিম রেজা ও সঙ্গীয় পুলিশ অফিসার। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে পুলিশের উপস্থিতেই অভিযুক্ত সাজ্জাদ ও ছেলে সাব্বির ভুক্তভোগীদের তেড়ে তেড়ে মারতে যান। এদিন বিকাল ৬টায় পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পরে দেশীয় অস্ত্রহাতে ভুক্তভোগীর ছেলে মোঃ ইসরাফিলের (২১) উপর হামলা চালায় অভিযুক্ত সাজ্জাদ ও তার ছেলে সাব্বির। এ সময় তাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা কুপিয়ে আহত করে। তাকে বাঁচাকে ওই গ্রামের মোড়ল মোঃ আবুল কালাম আদাজ এগিয়ে আসলে তাকেও ধারালো হাসুয়া দ্বারা মাথায় কোপ দিয়ে আহত করে অভিযুক্তরা। পরে তাদের উদ্ধার করে রামেকের ৮নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকার সাধারণ জনতা ক্ষুদ্ধ হয়ে অভিযুক্তদের গণধোলাই দেয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাজ্জাদ ও তার ছেলে সাব্বির পুরো এলাকার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। কারো সাথে কিছু হলেই তারা নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এলাকায় এনে হুমকি দেয় এবং তান্ডব চালায়। এছাড়া তারা প্রকাশ্যে বলে কাটাখালি থানার আমাদের পকেটে। এতো অপরাধের পরও ওসির সাথে সাব্বিরের সখ্যতা চোখে পড়ার মতো। থানায় গিয়ে দেখা যায়। এলাকায় তান্ডব চালিয়ে থানায় গিয়ে বুক ফুলিয়ে দাপটের সাথে এ ঘর ও ঘরে ঢুকছে বের হচ্ছে। আবার তার বিরুদ্ধে কাটাখালি থানার ওসিকে অভিযোগ করলে বলেন, দোষের তো কিছু দেখছিনা।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা দিকে মোসাঃ নূর ভানুর বাড়িতে একদল ভাড়াটিয় সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালায় সাজ্জাদ ও তার ছেলে। এ সময় গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে ঘরবাড়ি ভাংচুর চালায়। পরে ৯৯৯—এ কল দেন বাড়ির মালিক নূরভানু। আড়াইঘন্টা পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এসআই নুর মোঃ এর নেতৃত্বে সাজ্জাদের ছেলে সাব্বিরের হাতে থাকা হাম্বুর, হাসুয়া—সহ তাকে ও তার ভাড়াটিয়া ৭জনকে আটক করে। ভাড়াটিয়া সকলেই চন্দ্রিমা থানার থানার দায়রা পার্কের মোড় এলাকার বাসিন্দা। পরে অজ্ঞাত কারনে তাদের ছেড়ে দেন এসআই এবং বলেন সন্ধা ৭টার সময় আপনারা থানায় আসেন।
স্থানীয় মোঃ ফারুক হোসেন ও মোড়ল আবুল কালাম আজাদ-সহ একাধীক স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার বাইরে থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে বাড়ি ভাংচুর নূরভানুর স্বামী নূর ইসলাম ও তার ছেলে মোঃ ইসরাফিলকে (২১), মেরে ফেলবো বলে খেঁাজাখুজি সত্যিই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের শামিল। কাটাখালি থানার এসআই সাব্বিরের হাতে থাকা হাম্বুর, হাসুয়া-সহ তাকে ও তার ভাড়াটিয়া ৭জন সন্ত্রাসীদের আটক করে ছেড়ে দিয়ে জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের জম্ন দিয়েছে। এই তান্ডবের বিরুদ্ধে পুলিশের ভুমিকা সন্দেহজনক। পুরো এলাকার লোকজন তাদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে থাকলেও শুধু ওসি তাদের পক্ষে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন তারা।
বাড়ীর মালিক মোসাঃ নূরভানু জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় আমার বাড়ির পেছনে বাথরুমের কাছে সাজ্জাদ ও তার ছেলে সাব্বির একদল ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে অবস্থান করতে দেখি। মূহূর্তেই তারা হাম্বুর রামদা, দা দিয়ে আমার বাতরুম, ঘর ও টিন ভাংতে শুরু করে। এ সময় তারা আমার স্বামী সন্তানকে হত্যা করবে বলে খঁুজতে থাকে। প্রাণভয়ে আমি তাদের সরিয়ে দেই এবং ৯৯৯-এ কল করি। পুলিশ আড়াই ঘন্টা পরে এসে সাব্বির ও তার ভাড়া করা ৭জন সন্ত্রীকে আটক করে অজ্ঞাত কারনে ছেড়ে দেয়। আবার আমাদেরকেই গালি দেয় এবং মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয় পুলিশ। আমরা এখন নিরাপত্তা হিনতায় ভূগছি। এছাড়াও হামলাকারীরা আমার ঘরে ঢুকে নগদ টাকা ও চাঁদি ও স্বর্ণালংকার লুট করেছে নিয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনি কাটাখালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও জানান তিনি। জানতে চাইলে কাটাখালি থানার এসআই নুর মোঃ ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, আটক করেছিলাম ওসি স্যারের নির্দেশে ছেড়ে দিয়েছি এবং উভয় পক্ষকে সন্ধা ৭টায় থানায় আসতে বলেছি।
জানতে চাইলে কাটাখালি থানার অফিসার ইসচার্জ (ওসি), মোঃ তৌহিদুর রহমান জানান, হামলার ঘটনায় মোসাঃ নূরভানু বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। ভিডিও ভাইরাল এর বিষয়ে বলেন, ভিডিওতে অভিযুক্তদের দোষের কিছু দেখছিনা। প্রকাশ্যে ভাংচুর তান্ডব দেখেরও এমন মন্তব্যের কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।