রাজশাহীর পুঠিয়া ও দুর্গাপুর ও বাগমারায় উপজেলায় দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিরতিহীন ভাবে চলে এই ভোট গ্রহণ। ভোটের দিনে দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে বলে জানা গেছে।
রাজশাহীর বাগমারায় দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ্যাড. জাকিরুল ইসলাম সান্টু (ঘোড়া প্রতীক) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হয়েছেন আব্দুস সামাদ মোল্লা। দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে বেসরকারি ভাবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন সম্পাদক প্রভাষক শরিফুজ্জামান শরিফ। নির্বাচিত সকলেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজশাহী জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাগমারা উপজেলায় ১ শত ২২ টি ভোট কেন্দ্রের ৭ শত ৪৭ টি কক্ষে সকাল ৮ টা থেকে ভোট গ্রহন শুরু হয়ে বিকেলে ৪ টা পর্যন্ত একটানা ভাবে চলে। নির্বাচনে তেমন উত্তপ ছিলো না।
জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি এ্যাড. জাকিরুল ইসলাম সান্টু (ঘোড়া প্রতীক) ৪৭ হাজার ৩ শত ২২ ভোট পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বি আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আট বাবু ৪ হাজার ৩ শত ২১ ভোট পেয়েছেন। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কহিনুর বেগম (কলস প্রতীক) ৪২ হাজার ১ শত ২৩ ভোট বিজয়ী হয়েছেন। কহিনুরের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মমতাজ আক্তার বেবি। বেবির প্রাপ্ত ভোট ৫ হাজার ৩শত ৭৭ ভোট। এই নির্বাচনে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শহিদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় আগেই নির্বাচিত হন। এবারে আ’লীগ নেতা ও তার সমর্থিত প্রার্থীরাই মূলত উপজেলা পরিষদে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন।
পুঠিয়া উপজেলায় বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদ মোল্লা। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী জানা যায়, পুঠিয়া উপজেলার আব্দুস সামাদ মোল্লা (আনারস প্রতীকে) ২৬৬৬৫ ভোট পেয়ে বিজয় হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসাউল হক মাসুদ (ঘোড়া মার্কা) প্রতীকে পেয়েছেন ২৩৬৭৯ ভোট এবং উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম হিরা বা”চু মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৯৮৭২ ভোট।
এছাড়াও অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থীর লড়াইয়ে বর্তমান উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মুকুল চশমা প্রতীকে ২৮১৭৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন। জামাল মাস্টার তালা প্রতীকে প্রাপ্তি ভোট সংখ্যা ১০৯৫৫ এছাড়াও মুরাদ হোসেন টিউবাল প্রতীকে পেয়েছেন ১৯১৯৩ ভোট। মহিলা সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তিন জনের লড়াইয়ে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মৌসুমী রহমান বৈদ্যুতিক পাখা মার্কা প্রতীকে পেয়েছেন ২৬৯৮০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়। ফুটবল প্রতীকে পরিযান বেগম পেয়েছেন ২১৮৯২ ভোট। শবনাজ আক্তার পেয়েছেন হাস মার্কা প্রতীকে ৮৫৯৬ পেয়েছেন ভোট। পুঠিয়া উপজেলায় মোট ৭৮ টি ভোট কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। পুঠিয়া উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৮২ হাজার ১ জন।
দুর্গাপুর উপজেলায় বেসরকারী ভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া শরিফুজ্জামান শরিফ মোট ভোট পেয়েছেন ৪২ হাজার ১১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল মজিদ পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৭২ ভোট। প্রাপ্ত ভোটের ফলাফলে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক শরিফুজ্জামান শরিফ ১৪ হাজার ৭৪১ ভোটের বিশাল ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আব্দুল মজিদকে ভোটের ব্যবধানে পেছনে ফেলে প্রথমবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন প্রভাষক শরিফুজ্জামান শরিফ।
এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন টিওউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল কাদের ম-ল। তিনি পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৮২৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শামীম ফিরোজ তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৩৫১ ভোট। ৪ হাজার ৪৮৩ ভোটের ব্যবধানে আব্দুল কাদের মন্ডল নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন আব্দুল কাদের।
অপরদিকে সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বানেছা বেগম ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮৬৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কহিনুর বেগম কলস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৩০৬ ভোট। ৫৬১ ভোট বেশি পেয়ে বানেছা বেগম টানা চতুর্থবার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।