মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া শিশুকে বিনা বেতনে পড়াতে চান মাদ্রাসার পরিচালক


মঈন উদ্দীন , আপডেট করা হয়েছে : 25-01-2022

মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া শিশুকে বিনা বেতনে পড়াতে চান মাদ্রাসার পরিচালক

ধর্ষণের শিকার হওয়ায় রাজশাহীর এক শিশুকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনার সত্যতা মিলেছে। প্রথমে ভর্তি নিলেও তিন দিন পর আট বছরের ওই শিশুকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দিয়েছেন মাদ্রাসা পরিচালক। 

এই তদন্তে গিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জয়া মারিয়া পেরেরা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। গতকাল সোমবার সকালে নগরীর নগরীর হড়গ্রাম মুন্সিপাড়া এলাকার উম্মাহাতুল মু’মিনীন মহিলা মাদ্রাসা নামের ওই মাদ্রাসায় যান তাঁরা।

ভুক্তভোগী শিশুটি ২০২০ সালের ২১ মার্চ প্রতিবেশী এক কিশোরের হাতে ধর্ষণের শিকার হয়। ওই কিশোর এখন জেলহাজতে। শিশুটির বাবা শারীরীক প্রতিবন্ধী। রেলের জমির বস্তিতে একটি ঘর করে বসবাস করেন। শিশুর মা একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া হিসেবে চাকরি করেন। সম্প্রতি ওই শিশুকে মাদ্রাসাটিতে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শিশুটি আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছে জানতে পেরে তাকে বের করে দেন পরিচালক মাওলানা মোহা. হাবিবুল্লাহ।

এমন ঘটনা জানতে পেরে জেলা প্রশাসক দুই কর্মকর্তাকে সরেজমিনে তদন্তে পাঠান। এ সময় মাদ্রাসা পরিচালক হাবিবুল্লাহ নিজের ভুল স্বীকার করেন। তিনি শিশুর বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমাও চান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জয়া মারিয়া ওই শিশুকে ভর্তি নেওয়ার জন্য মাদ্রাসা পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন। বিনা বেতনেই সেখানে পড়ার সুযোগ পাবে শিশুটি। তবে একবার বের করে দেওয়ায় সেখানে আর মেয়েকে ভর্তি করতে রাজি নন তার মা।

শিশুটির মা বলেন, ‘একবার আমার মেয়েকে ভর্তি নিয়েও টাকা ফেরত দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। আবার ভর্তি করালেও পরিচালক আমার মেয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন। তাই সেখানে আর ভর্তি করাতে চাই না।’ মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়ার পর তিনি মেয়েকে একটি স্কুলে ভর্তি করেছেন বলেও জানান। তিনি জানান, সোমবার দুপুরে সমাজসেবা অধিদপ্তর ও ইউনিসেফের শিশু সহায়তার ১০৯৮ নম্বর থেকে ফোন এসেছিল। কর্মকর্তারা তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা তাঁর মেয়েকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি তাঁর ছোট্ট শিশুকে ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জয়া মারিয়া পেরেরা বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার হওয়ায় মেয়েটিকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়ার খবর শুনেই জেলা প্রশাসক স্যার আমাকে ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিলেন। আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। মাদ্রাসা পরিচালক ভুল স্বীকার করেছেন। শিশুটিকে মাদ্রাসায় ভর্তি নিয়ে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির অভিভাবক চাইলে ভর্তি করাতে পারবেন।’

আবার শিশুটিকে ভর্তি করালে দুর্ব্যবহার করা হবে শিশুটির মায়ের এমন শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভর্তি নেওয়ার পর ওই শিশুর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। আমরা সেদিকে নজর রাখব। সে রকম কিছু হলে এবার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাজশাহীর সময় /এএইচ


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]