প্রতারণা করলে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 02-05-2024

প্রতারণা করলে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন

প্রতারণা, ধোঁকার কবলে অনেকেই পড়েন। ভালো কথার ছদ্মাবরণে অন্যের ছলনার জালে আটকে নিজের অপূরণীয় ক্ষতি করে বসেন। বর্তমান সমাজে ভালো কাজ, কথার ছলে অন্যের ক্ষতি করা মানুষজনের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। এদের থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেও অনেকে রেহাই পান না। 

প্রতারকের আচার-আচরণ এতোটাই মার্জিত হয় যে ভুক্তভোগী কোনোভাবেই নিজের ক্ষতির বিষয়টি আঁচ করতে পারেন না। প্রতারণার ছলে ক্ষতিগ্রস্থদের আল্লাহ তায়ালা পরকালে বিশেষ প্রতিদান দেবেন। তবে প্রতারকদের জন্য রয়েছে শাস্তির হুঁশিয়ারি। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘...অতঃপর যে কেউ ওয়াদা ভঙ্গ করলে তার ওয়াদা ভঙ্গের পরিণাম বর্তাবে তারই ওপর। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে দেওয়া ওয়াদা পূরণ করবে অচিরেই আল্লাহ তাকে মহা পুরস্কার দেবেন।’ (সূরা ফাতহ, আয়াত : ১০)

প্রতারকের সঙ্গে মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। 

এক হাদিসে তিনি বলেন, প্রতারণাকারী ও ধোঁকাবাজকারীদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’ ( তিরমিজি, হাদিস : ১৩১৫ )

অপর এক হাদিসে তিনি বলেন, যে আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে, সে আমাদের লোক নয় এবং যেকেউ আমাদের প্রতারিত করবে, সে-ও আমাদের লোক নয় । (সহিহ মুসলিম)

এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর রাসূল সা. বাজারে খাদ্যশস্যের স্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এর ভেতরে হাত ঢোকালেন এবং অনুভব করলেন ভেজা ভেজা ভাব। অথচ স্তূপটির বাইরের দিক ছিল শুকনা। তিনি এই পণ্যের মালিককে জিজ্ঞাসা করলেন, ব্যাপার কী? 

লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এই শস্য বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। নবী কারিম সা. তাকে বললেন, বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত খাদ্যশস্য কেন স্তূপের ওপরের দিকে রাখোনি? তা হলে লোকজন তা দেখতে পেত। যে প্রতারক, সে তো আমাদের কেউ নয়।’ (সহিহ মুসলিম)

অন্যের ক্ষতি করে প্রতারক আত্মপ্রবঞ্চনায় ভুগলেও সে মূলত নিজেরই ক্ষতি করে বলে কোরআনে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা আল্লাহ ও মুমিনদের প্রতারিত করে, আসলে তারা নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকে প্রতারিত করে না; কিন্তু এটা তারা উপলব্ধি করতে পারে না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ৯)

প্রতারকদের সম্পর্কে কোরআন হাদিসে কোথাও সুসংবাদ বর্ণিত হয়নি। পরকালে তাদের জন্য কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।

এক হাদিসে বলা হয়েছে, রাসূল সা. সাহাবাদের কাছে জানতে চাইলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে নিঃস্ব গরিব?’ সাহাবিরা বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! যার কোনো টাকা-পয়সা নেই।’ রাসূল সা.  বললেন, ‘না। প্রকৃত গরিব ওই ব্যক্তি, যে কেয়ামতে পাহাড়সম নেকি নিয়ে উঠবে; কিন্তু সে জাহান্নামে যাবে। কারণ সে দুনিয়ায় কাউকে গালি দিয়েছিল, প্রতারণা করেছিল, অন্যের হক নষ্ট করেছিল ইত্যাদি। কিয়ামতের মাঠে ওইসব লোক তার কাছে পাওনা দাবি করবে। বিনিময়ে সে নিজের সব নেকি দিতে বাধ্য হবে। নেকি শেষ হলে তার কাছে দেওয়ার মতো আর কিছু থাকবে না। তখন সে পাওনাদারদের পাপের বোঝা নিজের মাথায় নিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৩৪৩)। 

অপর এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, ‘প্রত্যেক প্রতারকের জন্য কিয়ামতের দিন তার (নিতম্বের) ওপর একটি পতাকা থাকবে। আর পতাকা বিশ্বাসঘাতকতার পরিমাণ অনুযায়ী উঁচু করা হবে। সাবধান! জনগণের শাসক হয়েও যে বিশ্বাসঘাতকতা করে, তার চেয়ে বড় প্রতারক আর নেই।’ (মুসলিম : ৪৩৮৮)।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]