দেশের সর্বাধিক সেবন করা দুটি ট্যাবলেটের বিপুল পরিমাণ নকল নমুনা উদ্ধার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এরপর সেসব নকল ওষুধ আনা হতো রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার ওষুধ মার্কেটে। এরপর ব্যবসায়ীদের হাত ধরে কিংবা কুরিয়ার সার্ভিসে ছড়িয়ে দেওয়া হতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
বুধবার (৩০ মার্চ) গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চকবাজারের একটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে মোনাস-১০ ও প্যানটেনিক্স-২০ নকল ওষুধের চালানটি আটক করে ডিবি লালবাগ বিভাগ। এ সময় আলী আক্কাস শেখকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে, ফকিরাপুল এলাকা থেকে সেসব ওষুধ তৈরি কারখানার মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়।
দুজনের জবানবন্দি অনুযায়ী, রাজধানীর চকবাজার, ফকিরাপুল ও চুয়াডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ১০ লাখ ৩৪ হাজার ২৮০ পিস নকল প্যানটেনিক্স-২০ ট্যাবলেট ও ১৮ হাজার পিস নকল মোনাস-১০ ট্যাবলেট।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, অধিক মুনাফার আশায় আয়ুর্বেদ ওষুধ তৈরির আড়ালে বাজারে বহুল প্রচলিত এ ওষুধটি তৈরি করে বাজারজাত করছিল চক্রটি। এসব নকল ওষুধ সেবনে কোনো ধরনের উপকার হয় না, বরং উল্টো নানা ধরনের জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসাপত্রে এসব ওষুধের নাম দিলে কোন রোগী যদি এসব নকল ওষুধ সেবন করেন তাহলে কোনো উপকার হয় না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকরাও আস্থা হারান। নকল ওষুধ তৈরি বড় ধরনের একটি ক্রাইম।
তিনি আরও বলেন, ৩-৪ বছর ধরে চক্রটি এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। ১৬ টাকার মোনাস-১০ তারা বিক্রি করত ২ টাকায়, ৬-৭ টাকার প্যানটেনিক্সও তারা ২ টাকায় বিক্রি করত। এসব নকল ওষুধ তৈরিতে আটা-ময়দা-রং ব্যবহৃত হতো। এমনকি ডাই বা স্টেরয়েড ব্যবহৃত হতে পারে। নন ফার্মাসিউটিক্যাল এসব ওষুধ সেবনে কোনো উপকার তো হতোই না, বরং কিডনি-লিভার, হৃদযন্ত্র বা শ্বাসতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
বাজারজাত করার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নকল ওষুধগুলো প্রথমে মিটফোর্ডে আসে। এরপর সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কম দামে ছড়িয়ে দেওয়া হতো।
ডিবি প্রধান বলেন, এসব নকল ওষুধের ফলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা হুমকির মুখে। দয়া করে এসব কেউ বানাবেন না, তাহলে বিপদে পড়ে যাবেন। যারাই নকল ওষুধ তৈরির চেষ্টা করবে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আমরা ভেজালবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করছি।
রাজশাহীর সময়/এএইচ