উরোপীয় ইউনিয়নের ফুড সেফটি বিভাগ রপ্তানিকৃত ভারতীয় খাদ্য দ্রব্যগুলিতে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পেল! তাদের অভিযোগ, বিগত সাড়ে তিন বছরে ভারত থেকে রফতানি করা অন্তত ৫২৭টি খাদ্যপণ্যে এই রাসায়নিক পেয়েছে তারা। এর মধ্যে বেশির ভাগই বাদাম, তিল, ভেষজ পদার্থ, মশলা, ডায়েট-ফুড জাতীয় খাদ্যবস্তু।
৮৭টি খাদ্যপণ্যকে সীমান্তেই আটকে দেওয়া হয়েছিল। বাকি খাদ্যদ্রব্যগুলি পরে বাজার থেকে সরানো হয়।
পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ইথিলিন অক্সাইড নামে একটি বর্ণহীন গ্যাস কীটনাশক ও জীবাণুমুক্ত করার রাসায়নিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। রাসায়নিকটি চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু খাদ্যদ্রব্যে এই রাসায়নিক কোনও ভাবে মিশে শরীরে ঢুকলে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ভুক্ত দেশগুলির খাদ্য-নিরাপত্তা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ৫২৫টি খাদ্যদ্রব্যে রাসায়নিকটি পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে ৩৩২টি দ্রব্য সরাসরি ভারত থেকে গিয়েছিল। বাকি খাদ্যদ্রব্যগুলিতেও ভারতের যোগ রয়েছে।
খাদ্যদ্রব্য পরীক্ষাকারী ল্যাবের মুখ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, ইথিলিন অক্সাইড ছাড়াও আরও দু'টি রাসায়নিকের উপস্থিতি মিলেছে। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ইথিলিন গ্লাইকল। আফ্রিকায় কাশির সিরাপের মধ্যে এই রাসায়নিকটি পাওয়া গিয়েছিল। সিরাপ খেয়ে বহু শিশুর মৃত্যু হয়েছিল সেই ঘটনায়। ইথিলিন অক্সাইড চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু একটা বিকল্প কিছু পাওয়া জরুরি। তাঁর কথায়, 'ভারতের খাবারের গুণমান ও নিরাপত্তা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ 'দ্য ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যানডার্ডস অথরিটি' (এফএসএসএআই)-র ভেবে দেখা উচিত, যদি বিকল্প জীবাণুনাশক হিসেবে গামা রশ্মির ব্যবহার করা যায়। তাদের উচিত বিভিন্ন শিল্প-সংস্থাগুলোকে এ বিষয়ে ভাবতে উৎসাহ দেওয়া।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের খাদ্য বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানাচ্ছেন, বিদেশে রফতানি করা খাদ্যদ্রব্য গুলোতে গুণগত মান উৎকৃষ্ট মানের। সেগুলোর যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে স্থানীয় বাজারে যা বিক্রি হয়, তার কী অবস্থা কে জানে। সেগুলোও পরীক্ষা করা দরকার। এভাবে অজান্তে কতটা বিষ যে রোজ আমাদের পেটে ঢুকছে, কে জানে! আমাদেরই দেশের তৈরি পাঁচ শতাধিক খাদ্যদ্রব্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন আটকে দেওয়ার ঘটনাই এই সন্দেহ উসকে দিলো।