দুনিয়াদারদের পরকালীন পরিণতি


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 29-04-2024

দুনিয়াদারদের পরকালীন পরিণতি

সুরা নাজিআত কোরআনের ৭৯তম সুরা, এর আয়াত সংখ্যা ৪৬ এবং রুকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সুরা নাজিআত মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সুরায় আল্লাহ তাআলা সুনিশ্চিতভাবে মানুষকে অবহিত করেছেন কেয়ামত সংঘটিত হবেই। মৃত্যুর পর মানুষকে আবার জীবিত করে হবে এবং নিজেদের কাজের প্রতিফল মানুষকে ভোগ করতেই হবে। সুরাটির শুরুতে মানুষের প্রাণ হরণকারী, আল্লাহর বিধানসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নকারী এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী সারা বিশ্ব জাহানের ব্যবস্থাপনা পরিচালনাকারী ফেরেশতাদের শপথ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলার অসীম ক্ষমতার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে; যে সর্বশক্তিমান স্রষ্টা সুনিপুনভাবে গোটা বিশ্বজাহান পরিচালনা করছেন, তিনি অবশ্যই পৃথিবী ধ্বংস করে দিতে এবং মানুষকে ‍পুনরায় জীবিত করে হিসাব নিকাশের জন্য জমা করতে সক্ষম।

সুরা নাজিআতের ৩৪-৪৬ আয়াতে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেন,

(৩৪)

فَإِذَا جَاءَتِ الطَّامَّةُ الْكُبْرَى

ফাইযা জাআতি-ত্তাম্মাতুল কুবরা।

অতঃপর যখন মহাসংকট এসে যাবে।

(৩৫)

يَوْمَ يَتَذَكَّرُ الإنسان مَا سَعَى

ইয়াওমা ইয়াতাযাক্কারু-লইনসানু মা সাআ।

অর্থাৎ যেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম স্মরণ করবে

(৩৬)

وَبُرِّزَتِ الْجَحِيمُ لِمَنْ يَرَى

ওয়া বুররিঝাতিল জাহীমুলিমাইঁ ইয়ারা।

এবং দর্শকদের জন্যে জাহান্নাম প্রকাশ করা হবে,

(৩৭)َ

أَمَّا مَنْ طَغَى

ফাআম্মা মান তাগা।

তখন যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে;

(৩৮)

وَآثَرَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا

ওয়া আসারাল হায়াতা-দ্দুনইয়া।

এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে,

(৩৯)

فَإِنَّ الْجَحِيمَ هِيَ الْمَأْوَى

ফাইন্নাল জাহীমা হিয়াল মাওয়া।

তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।

(৪০)

وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَى

ওয়া আম্মা মান খাফা মাকামা রাব্বিহী ওয়া নাহান্নাফছা আনিল হাওয়া।

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে,

(৪১)

فَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَى

ফাইন্নাল জান্নাতা হিয়াল মা’ওয়া।

তার ঠিকানা হবে জান্নাত।

(৪২)

يَسْأَلونَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا

ইয়াসআলূনাকা আনিস-সাআতি আইইয়ানা মুরসাহা।

তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কখন হবে?

(৪৩)

فِيمَ أَنْتَ مِنْ ذِكْرَاهَا

ফীমা আনতা মিন যিকরাহা।

এর বর্ণনার সাথে আপনার কি সম্পর্ক ?

(৪৪)

إِلَى رَبِّكَ مُنْتَهَاهَا

ইলা রাব্বিকা মুনতাহাহা।

এর পরম জ্ঞান আপনার পালনকর্তার কাছে।

(৪৫)

إِنَّمَا أَنْتَ مُنْذِرُ مَنْ يَخْشَاهَا

ইন্নামাআনতা মুনযিরু মাইঁ ইয়াখশাহা।

যে একে ভয় করে, আপনি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবেন।

(৪৬)

كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَهَا لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا عَشِيَّةً أَوْ ضُحَاهَا

কাআন্নাহুম ইয়াওমা ইয়ারাওনাহা লাম ইয়ালবাসূ ইল্লা আশিইইয়াতান আও দুহাহা।

যেদিন তারা একে দেখবে, সেদিন মনে হবে যেন তারা দুনিয়াতে মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক সকাল অবস্থান করেছে।

১. পরকাল, হিসাব ও প্রতিদানে বিশ্বাস মুসলমানদের মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস, পরকালে অবিশ্বাসী হয়ে কেউ মুমিন হতে পারে না। পরকালের বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে অন্তরে ধারণ করা আমাদের কর্তব্য।

২. মানুষ কেয়ামতের দুটি দলে বিভক্ত হবে। যারা ইমানদার, যারা দুনিয়ার জীবনে আল্লাহকে ভয় করেছে ও আখেরাতের জীবনকে প্রাধান্য দিয়েছে, তারা জান্নাতে যাবে। অবিশ্বাসী ও পাপাচারীরা জাহান্নামে যাবে।

৩. অদৃশ্য ও কেয়ামতের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলার কাছেই আছে। আল্লাহর রাসুলও (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গায়েব জানতেন না। তিনিও জানতেন না কেয়ামত কবে হবে।

৪. কেয়ামতের দিন দুনিয়ার জীবন তুচ্ছ মূল্যহীন এক স্বপ্নদৃশ্যের মতো মনে হবে। মনে হবে মানুষ দুনিয়াতে এক সন্ধ্যা বা এক সকাল মাত্র ছিল।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]