রাজশাহী মহানগরীর উপশহর এলাকায় প্রেমিকার (৩৩) বাড়ির সামনে গিয়ে ফোন করে বিষপান করে প্রেমিক সোহেল রানা রিংকু (৩৫)। এর কিছুক্ষণ পর সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উপশহর নিউমার্কেটের একটি দোকানের সামনে নিয়ে মাথায় পানি ঢালে। ওই সময় রিংকুর অবস্থার অবনতি হলে প্রেমিকার ভাই জনৈক ইসতিয়াক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রামেকের (১৬ নং ওয়ার্ডে) ভর্তি করে। সেখানে অনুমানিক ২০মিনিট পরে মারা যায় প্রেমিক রিংকু।
ঘটনাটি ঘটে (৮ এপ্রিল) ২৭ রমজান মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার উপশহর ১নং সেক্টর এলাকায়। এর পরের দিন (৯ এপ্রিল) ২৮ রমজান দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট রিংকুর মরদেহ হস্তান্তর করেন বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। এ ব্যপারে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি (ইউডি) অপমৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে।
মৃত সোহেল রানা রিংকু, সে চাপাইনবাগঞ্জ জেলা শিবগঞ্জ থানার সোনামসজিদ গোলাপ বাজার এলাকার বাসিন্দা। এছাড়াও সে সিরাজগঞ্জ জেলায় পল্লিমঙ্গল এনজিও’তে চাকরি করতেন। অপরদিকে প্রেমিকা (৩৩), তিনি মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার উপশহর এলাকার বাসিন্দা। মহানগরীর আলুপট্টি এলাকায় একটি ব্যাংকে চাকরি করেন।
এদিকে, রিংকুর মৃত্যুর ঘটনায় তার আত্নীয়দের মধ্যে থেকে নানা ধরনের গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে মৃত্যুর রহস্য। তারা বলছেন রিংকুর মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি। এটা একটা রহস্যজনক মৃত্যু।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে রিংকুর এক আত্নীয় সাংবাদিকদের অনেক ছবি, ভিডিও কলে কথোপকথন এর স্কিনশর্ট ও হোয়াস্এ্যাপে আলাপ-আলোচনার বেশ কিছু স্কিনশর্ট সরবারহ্ করেন। তিনি বলেন, গত অনুমানিক ১ বছর আগে প্রেমিকার (৩৩) সাথে রিংকুর পারিবারিক ভাবে বিয়ের কথা পাকাপোক্ত হয় এবং বিয়ের দিনধার্ষ করা হয়। কিন্তু বিয়ের ধার্ষ তারিখে মৃত রিংকুর বোনের শ্বশুর মারা যান। ফলে বিয়ের তারিখ পিছিয়ে যায়। এরই মধ্যে প্রেমিকা রিংকুকে বিয়ে করবে না বলে জানায়। সবকিছুই স্বাভাবিক নিয়মেই চলছিলো। ছেলে-মেয়ে উভয়েই নিজ নিজ কর্মে ব্যস্ত ছিলো। কিছুদিন না যেতেই প্রেমিকা তার প্রেমিক রিংকুর সাথে যোগাযোগ করে এবং তাদের পূর্বের ন্যায় ভাব ভালবাসা শুরু হয়। তারা ভিডিও কলে কথা বলে, হোয়াস্এ্যাপে স্পর্শকাতর আলাপ-আলোচনা করে। এরই মধ্যে রিংকু সিদ্ধান্ত নেয় তার প্রেমিকাকে বিয়ে করবে। কিন্তু প্রেমিকা সাফ জানায় তাকে বিয়ে করবে না। এতে রিংকুর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। ২৭ রমজান সিরাজগঞ্জ থেকে চলে আসে রাজশাহীতে। এদিন ইফতারের পর প্রেমিকার বাড়ির সামনে গিয়ে ফোন দিয়ে বলে তুমি বেয়িয়ে এসো নইলে আমি বিষপাণ করবো। উত্তরে প্রেমিকা বলে তুই বিষ খা আমি জেল খাটবো। যেমন কথা তেমন কাজ, রিংকু সেখানেই বিষপাণ করে এবং ওই দিনই রাতে রামেকে তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যপারে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে মেয়ের ভাই জনৈক ইসতিয়াক জানান, আমি কিছু বলবো না। জানতে হলে রাজা ভাইকে ফোন করে জানুন, বলেই ফোন কেটে দেন।
এ ব্যপারে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে প্রেমিকা (৩৩) জানান, সরি আমি আপনার সাথে কোন কথা বলতে পারবোনা।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে, বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, বিষপানে রিংকু আত্মহত্যা করেছে। এ ব্যপারে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি (ইউডি) অপমৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। তবে তার অভিভাবক কেউ বাদী হয়ে মামলা দিলে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে।