সারাবিশ্বে ঈদের খাবার


ফারহানা জেরিন , আপডেট করা হয়েছে : 10-04-2024

সারাবিশ্বে ঈদের খাবার

ঈদ মানেই আনন্দ। সংস্কৃতি অনুসারে ঈদের আয়োজনও থাকে ভিন্ন। এই ভিন্নতা বেশি দেখা যায় রসনায়। রসনার বিচারে কিছু কিছু খাবারকে কেন্দ্র করেই ঈদের দিনের আয়োজন কেন্দ্রীভূত হয়। এমন আয়োজনের ভিন্নতা দেখা যায়।

প্রায় প্রতিটি দেশেই মূল খাবারে থাকে ভিন্নতা। একেকটি দেশ একেক ধরণের খাবারকে ঘিরেই কোলাকুলি, ঈদের আড্ডার আয়োজন করে। সেই বৈচিত্র্যকে উল্লেখ করেই আজকের এই আয়োজন।

দক্ষিণ এশিয়ার আয়োজন সেমাই: দক্ষিণ এশিয়ার ঈদ শুরু হয় সেমাই দিয়ে। সেমাই হলো এই দিনটির প্রধান ডেজার্ট। ঈদের আপ্যায়নে সেমাই থাকেই। বাঙালিয়ানার হিসেবে অনেকে পায়েস করলেও সেমাই থাকে মূল আকর্ষণ। আমাদের দেশে অনেক স্থানে হাতে বানানো চালের সেমাইও পরিবেশন করেন। ঘি, চিনি—এই দুটো উপাদান দিয়ে সেমাই রান্না করা যায়। আবার ঘন দুধ ও চিনি দিয়েও সেমাই রান্না করে ফেলেন।

মরোক্কোর ‘তাজিন’: মরোক্কোতে ‘তাজিন’ দিয়ে ঈদ উদযাপন করা হয়। তাজিন রান্না করতে মাটির পাত্র ব্যবহার করা হয়। এই মাটির পাত্রের নামও তাজিন। ভেড়া ও গরুর মাংসের সঙ্গে নানারকম সবজি ও মশলার মিশ্রণও থাকে এই খাবারে। খাবারটি অনেক অল্প আঁচে রান্না করা হয়। দেখলে অনেকটা স্ট্যু রান্নার কথা মনে পড়ে। মরক্কো বাদে আলজেরিয়াতেও এই খাবার জনপ্রিয়।

পাকিস্তানের ‘শীর খুরমা’: শুধু পাকিস্তান নয়, ভারতের মুসলমানরাও এই খাবারটিকে ঈদের সকালের প্রধান ডেজার্ট মনে করেন। ঘন দুধ দিয়ে রান্না করা এক ধরনের সেমাই এটি। সবাই বলেন শীর খুরমা। অনেক বাদাম ও খেজুর থাকে। শুধু তাই নয়, কাঠবাদাম, আখরোট ও অন্যান্য হরেক বাদামও এটিতে দেয়া হয়।

আফগানিস্তানের ‘বোলানি’: আফগানিস্তানে ঈদের দিন মানেই সকালে বোলানি পরিবেশন করা হবে। এই খাবারে পাতলা রুটির ভেতরে সবজি, আলু, ডাল বা কুমড়ার পুর দেয়া হয়। এর সঙ্গে দেয়া হয় টক দই। শুধু ঈদই নয়, সারা বছরই এই খাবার পরিবেশন করা হয় আফগানিস্তানে। তবে ঈদের সকালে বোলানি ছাড়া অনেকেই ঈদ উদযাপনের কথা ভাবতে পারেন না।

মধ্যপ্রাচ্যে ল্যাম্ব রোস্ট: মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে মাংসজাতীয় খাবারই বেশি জনপ্রিয়। আর এক্ষেত্রে দুম্বার রোস্টটিকেই তারা গুরুত্ব দেন। আবার  ঈদের দিনে মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশে বিশেষ এক ধরনের কুকি দেখতে পাওয়া যায়। এই কুকি বানানো হয় মাখন দিয়ে। খেজুরের পেস্ট বা বাদামের পুর দিয়ে ওপরে হালকা চিনির গুড়া ছিটিয়ে দেয়া হয়। একেক দেশে এই কুকির একেক নাম।

বসনিয়ার ‘তুফাহিজা’: আপেল সেদ্ধ করে বসনিয়ার এই ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করা হয়। সেদ্ধ করা আপেলের মধ্যে আখরোট বাদাম ভরাট করা হয়। সবার শেষে হুইপড ক্রিম দিয়ে উপরে ডেকোরেশন করা হয়।

সোমালিয়ায় জনপ্রিয় ‘ক্যাম্বাবুর’দেখতে অনেকটা প্যানকেকের মতো। মাংস বা সবজির সঙ্গে গরম গরম পেনকেক হিসেবে পরিবেশন করা হয়। চিনি আর দই দিয়েও আলাদা খাওয়া যায়। সোমালিয়ার পাশেই ইথিওপিয়ায় এটিকে ইনজেরা বলে ডাকা হয়। এটি ইরিত্রিয়া, ইয়েমেন ও সুদানেও অনেক জনপ্রিয়।

তুরস্কে ‘লোকুম’: অনেক ধরনের মিষ্টির টুকরো দিয়ে তুরস্কে ঈদে পরিবেশন করা হয় ‘লোকুম’। বরফির মতো দেখতে বিশেষ এই মিষ্টি বানাতে চিনি, স্টার্চ আর খেজুর, বাদামের মতো উপাদান ব্যবহৃত হয়। মিষ্টিতে অনেক রঙও ব্যবহার করা হয়।

ব্রিটেন জুড়ে ‘বিরিয়ানি’: ব্রিটেনের মুসলিমদের কাছে ঈদ মানেই বিরিয়ানি। চাল, মাংস এবং সবজি দিয়ে তৈরি এই মুখরোচক সঙ্গে থাকে দই এবং পুদিনার চাটনি। অবশ্য এই দেশের অধিকাংশই যেহেতু দক্ষিণ এশিয়ার সেহেতু বিরিয়ানি জনপ্রিয় হওয়াটাই স্বাভাবিক।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]