নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে বয়স জালিয়াতি, আর্থিক লেনদেন, স্বজনপ্রীতি ও তথ্য গোপন করে নৈশপ্রহরী নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৬ মার্চ রাজশাহীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে নাটোর জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্তপূর্বক আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
অনুসন্ধানে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন শুন্যপদে গোপীনাথপুর গ্রামের ইব্রাহীম প্রামানিকের ছেলে রফিকুল ইসলামকে নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু ওই নিয়োগে রফিকুল ইসলামের বয়সের তথ্য গোপন করা হয়। জাতীয় পরিচয়পত্র (৭৩৩৪৯৯৯১৫৩) অনুসারে রফিকুল ইসলামের বয়স ৪৫ বছর (১০ অক্টোবর ১৯৭৫)। কিন্তু ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী করে নিয়োগ নিয়েছেন ওই নৈশ্য প্রহরী। সেখানে তার বয়স দেখানো হয়েছে ২৫ বছর (২০ জুলাই ১৯৯৭)। এ ঘটনায় জনস্বার্থে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ওই লিখিত অভিযোগটি দেন স্থানীয়রা। একইসাথে বিষয়টি অবগতির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর সহ বিভিন্ন শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছেন।
এদিকে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামোতে বলা হয়েছে- যেকোন পদে নিয়োগে ৩৫ বছরের অধিক বয়স্ক কোন ব্যক্তি অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। বিধিভঙ্গ করে কিভাবে রফিকুল ইসলাম নিয়োগপ্রাপ্ত হলেন এ নিয়ে এলাকাবাসীর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি সরেজমিনে একাধিক বার বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা বহিতে ওই প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর থাকলেও দেখা পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন ও নিরাপত্তা কর্মী রফিকুল ইসলামের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি তারা। তবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান হিরা বলেন, নিরাপত্তা কর্মি রফিকুল ইসলামের নিয়োগ বোর্ডে অনেকেই ছিল, যে সকল কাগজপত্র দেখিয়েছিল তাতে নিয়মের মধ্যে ছিল। যদি প্রতারণা করে বানোয়াট কাগজপত্র দিয়ে থাকে অবশ্যই তার শাস্তি হতে হবে।
এ প্রসঙ্গে নাটোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আখতার হোসেন বলেন, নাজিরপুর স্কুলে জালিয়াতির মাধ্যমে কর্মচারি নিয়োগের অভিযোগটির তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিধিমোতাবেক খুব শীঘ্রই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।