রাজশাহীর হিমাগারে মজুত হচ্ছে ভারতের থেকে আমদানি করা আলু


স্টাফ রিপোর্টার , আপডেট করা হয়েছে : 04-04-2024

রাজশাহীর হিমাগারে মজুত হচ্ছে ভারতের থেকে আমদানি করা আলু

রাজশাহীর হিমাগারে বস্তা পরিবর্তন করে দেশি আলুর সঙ্গে ভারতীয় আলু হিমাগারে রাখা হচ্ছে। বাজারের ঘাটতি মেটানোর জন্য এ কাজ করা হচ্ছে।

এদিকে রাজশাহীর বাজারে আলুর দাম বেড়েই যাচ্ছে। নগরীর সাহেববাজারের কাঁচাবাজারে লাল রঙের আলুর কেজি ৬০ টাকায় উঠেছে। কয়েক দিন আগেও এই আলুর কেজি ৪০ টাকা ছিল।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে এবার ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। গত বছর হয়েছিল ৩৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। গত বছর রাজশাহীতে ১০ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়েছিল। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লাখ টন। কম আলু উৎপাদন হওয়ার কারণে রাজশাহীর বেশ কিছু হিমাগারের চার ভাগের এক ভাগ ক্যাপাসিটি (সংরক্ষণের সক্ষমতা) খালি রয়েছে। সেখানে ভারত থেকে আমদানি করা আলু মজুত করা হচ্ছে।

পবা উপজেলার বায়া এলাকার হিমালয় হিমাগারে গিয়ে দেখা যায়, হিমাগারের সামনে শেডের সবটা জুড়ে প্লস্টিকের লাল বস্তায় ভরা ভারতীয় আলু। আলুর বস্তার গায়ে লাগানো লেবেলে ভারতের বর্ধমানের ঠিকানা লেখা রয়েছে। আকারে বড় ঘিয়ে রঙের এই আলু শ্রমিকেরা ভারতীয় বস্তা বদল করে দেশীয় পাটের বস্তায় ভরছেন।

বস্তা ভরার কাজ তদারক করছিলেন হিমাগারের ব্যবস্থাপক হারুণ-অর-রশিদ। আমদানি করা আলু মজুত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজশাহীতে এবার আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। অক্টোবরের শেষের বৃষ্টির কারণে আলু ছোট হয়েছিল। তাদের হিমাগারের এক-চতুর্থাংশ খালি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমদানিকারকেরা ভারত থেকে আলু আমদানি করছেন। সেখান থেকে তারা সামান্য কিছু আলু পেয়েছেন। সেটাই হিমাগারে রাখছেন। তার জানামতে, জেলার আরও দুটি হিমাগার ভারতীয় আলু নিয়ে আসছে।

ভারত থেকে আলু আমদানি করার কথা শুনে তানোরের এক আলুচাষি বলেন, রাজশাহীর আলুর মান অত্যন্ত ভালো। সারা দেশে এই আলুর বিশেষ চাহিদা রয়েছে। এখন হিমাগারের মালিকেরা তাদের হিমাগার খালি রাখতে চাচ্ছেন না। তারা ভারতের নিম্নমানের আলু এনে ভরে রাখছেন। পরে যখন দাম আরও বেড়ে যাবে, তখন দেশি আলুর সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করা হবে। এতে রাজশাহীর আলু সম্পর্কে ভোক্তারা বিভ্রান্ত হবেন। আর আলুচাষির চেয়ে ব্যবসায়ীরাই বেশি লাভবান হবেন। তারা ভারত থেকে কম দামে আলু আমদানি করে বেশি দামে বিক্রি করবেন।

আলু আমদানির খবরটি রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে নেই। দপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, আলু আমদানির খবর তাদের কাছে নেই। এই প্রথম শুনলেন। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য আমদানি করা আলু মজুত করা যাবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।

এ ব্যাপারে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কল্যাণ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বলেন, ভারত থেকে এখন আলু আমদানির কথা তার জানা নেই।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, আমদানির উদ্দেশ্যই হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা। দাম বেশি হওয়ার কারণেই হয়তো সরকার এ সময়ে আলু আমাদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আলু সরাসরি বাজারে আসার কথা, যাতে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ অবস্থায় কিছুতেই এই আলু মজুত করা যাবে না। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মজুতদারদের বিরুদ্ধে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]