চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে অপরিপক্ব তরমুজ, স্বাদ নিতে পারছে না সাধারণ মানুুষ


ইব্রাহিম হোসেন সম্রাট: , আপডেট করা হয়েছে : 20-03-2024

চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে অপরিপক্ব তরমুজ, স্বাদ নিতে পারছে না সাধারণ মানুুষ

তরমুজের মৌসুম শুরু হয় চৈত্রের শেষে ও বৈশাখের শুরুতে। অর্থাৎ এপ্রিল মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত তরমুজ পাওয়া যায়। কিন্তু বাজারে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে দেখা মিলছে তরমুজের। তবে সবচেয়ে বেশি তরমুজ বিক্রি শুরু হয় রমজান মাসের শুরু থেকে। ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, এসব তরমুজ অপরিপক্ব। খাওয়ার অনুপোযোগী। বিক্রেতা বলছেন, এগুলো বারোমাসি তরমুজ। মৌসুম শুরু হলে আবারও তরমুজ উঠবে।

পরিপূর্ণ মৌসুম শুরু না হলেও রমজানে বেশি লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা অপরিপক্ব তরমুজ মাঠ থেকে নিয়ে এসে বিক্রি করছেন। এসব ফলের রঙ ও স্বাদ অনেক কম। তারপরও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে রসালো ফলটি। এতে ক্রেতারাও অসন্তুষ্ট।

তরমুজ নিয়ে কয়েক বছর ধরে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে চলছে এক ধরনের অসন্তোষ। বিক্রেতারা পিস হিসাবে কিনে বিক্রি করছেন কেজি দরে। গত কয়েক বছরেও এ বিষয়ে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বাজার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ২০২১ সালে করোনা মহামারির সময় পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। এরপর আর তরমুজ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি নাটোরে প্রশাসন পিস হিসেবে বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে।

রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত ওজনের তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বাজার, পাড়া ও মহল্লার মোড়ের দোকানে ছোট ও মাঝারি আকারের তরমুজ বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি করা হচ্ছে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা। গেল বছর ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এর আগের বছরও এরকমই দামেই বিক্রি হয়েছিল।

নগরীর সাহেববাজার এলাকায় কথা হয় মোজাম্মেল হক নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি কেজি তরমুজ ৮০ টাকা অনেক বেশিই। তারা ক্ষেত থেকে পিস হিসাবে কিনে কেজিতে বিক্রি করছে। দেশের জনগণকে নিয়ে ব্যবসায়ীরা তামাশা শুরু করেছেন। এসব দেখার যেন কেউ নেই দেশে।

সাহেববাজার এলাকার খুচরা ফল বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, আমাদের আড়ত থেকে কিনে আনতে হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। এখানে নিয়ে এসে ৫ টাকা লাভে আমরা তরমুজ বিক্রি করছি। মৌসুম শুরু হলে দাম কমে যাবে।

নগরীর শালবাগান এলাকার ফলের আড়তদার শাহজামাল বলেন, গতবার এ সময় যে ১০০ তরমুজ ১৫ হাজার টাকায় আড়ত থেকে কেনা যেত। এবার তা ২৫ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। আমাদের আরও খরচ আছে। এর মধ্যে পরিবহন ও শ্রমিকদের টাকা দিতে হয়। সেগুলো যোগ করে পাইকারি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে। এখান থেকে নিয়ে গিয়ে খুচরা বিক্রি ৬৫ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে। আবার কেউ বেশি দামেও বিক্রি করছে।

আড়তদাররা বলছেন, এসব তরমুজ বরিশাল বিভাগ নিয়ে আসা হচ্ছে। বরগুনা ও ভোলা থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে তরমুজ। এরপর নিয়ে আসা হবে খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা থেকে। নাটোরের তরমুজ সব শেষে নিয়ে এসে বিক্রি করা হয়।

কৃষি বিভাগ বলছে, দেশে তরমুজ সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে ওঠে। এটাই তরমুজের প্রধান মৌসুম। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে এ সময় ছাড়া অন্য সময়েও তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে মে থেকে সেপ্টেস্বর পর্যন্ত এ তরমুজ বেশি পায়া যায়। এ তরমুজকে অনেকে নাম দিয়েছেন ‘বারোমাসি তরমুজ’। তরমুজগুলো অসময়ে ওঠার কারণে চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। কোনো স্থানে হলুদ রঙের খোসার অমৌসুমি তরমুজেরও চাষ হচ্ছে। দিন দিন অমৌমুমে তরমুজ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]