রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (RSS) সমালোচনা করায় ভারতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ইংল্যান্ডের বাসিন্দা ভারতীয় বংশোদ্ভূত অধ্যাপক ও লেখক নীতীশা কাউলকে। ৪৮ বছরের লেখককে বেঙ্গালুরু বিমানন্দর থেকেই দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন। গেরুয়া শিবিরের সমালোচনার জন্যই যে তাঁকে ভারতে ঢুকতে দেয়নি দিল্লি, সোশাল মিডিয়ায় এই অভিযোগ করেছেন খোদ কাশ্মীরি পণ্ডিত ওই লেখক। এই ঘটনায় জোর রাজনৈতিক তর্জা শুরু হয়েছে।
কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের আমন্ত্রণে বেঙ্গালুরুতে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন নীতীশা। যদিও অভিবাসন দপ্তরের আধিকারিকরা বিমানবন্দরে তাঁকে আটকান। লেখকের দাবি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে হেনস্তার পরে তাঁকে ইংল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়। ওয়েস্টমিনিস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং লেখক এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক মূল্যবোধ নিয়ে কথা বলায় ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ! কর্ণাটক সরকারের আমন্ত্রণে একজন সম্মানিত প্রতিনিধি হিসাবে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলাম। কিন্ত কেন্দ্র ভারতে ঢুকতে দিল না। যদিও পাশপোর্ট, ভিসা-সহ আমার কাছে সমস্ত বৈধ নথি ছিল।”
লেখক দাবি করেছেন, অভিবাসন দপ্তর বার বার একটা কথাই জানায়, ‘দিল্লির নির্দেশ’। এছাড়া অন্য যুক্তি দিতে পারেনি। ‘আমার কাছে কর্নাটক সরকারের আমন্ত্রণপত্র ছিল। থাকা-খাওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য সরকারই। ভারতে প্রবেশ বাধা নিয়ে দিল্লির তরফে আগেভাগে কোনও চিঠিও দেওয়া হয়নি।’ সোশাল মিডিয়ায় লেখিকা আরও জানান, ‘আমার কয়েক দশকের কাজই আমার হয়ে কথা বলবে।’ তিনি দাবি করেন, অভিভাসন দপ্তরের কর্মীরা সরাসরি না বললেও বুঝিয়ে দেন, আরএসএসের সমালোচনা করায় তাঁকে আটকানো হয়েছে।
এই ঘটনায় রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে একহাত নিয়েছে কর্নাটক বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দাবি, ওই লেখিকা পাকিস্তানপন্থী। তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোয় কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে জবাবদিহি করতে হবে। ‘ভারতবিরোধী’ লেখিকাকে বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়ায় অভিভাসন দপ্তরকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফে। যদিও প্রশ্ন উঠছে, আরএসএস তথা হিন্দুত্ববাদীদের সমালোচনা মানেই কি দেশবিরোধী তথা পাকিস্তানপন্থী? তাছাড়া যে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর অত্যাচার নয়ে সরব বিজেপি, সেই সম্প্রদায়ের লেখক ‘দেশবিরোধী’ আখ্যা দেওয়াতেও প্রশ্ন উঠছে। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।