অবশেষে নিউ ইয়র্ক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক ও ইউটিউবার ইলিয়াস হোসেন। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিউ ইয়র্কের অদূরে একটি দ্বীপ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর জ্যামাইকার ১১৩ প্রিসেন্ট হাজতে নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল তাকে জামিনের জন্য আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে।
জানা যায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকাতে ভিডিও করার পর থেকে তার খোঁজ শুরু করেন নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। তারপর থেকেই তিনি নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। তার ফোন ট্র্যাকিং করে নিউ ইয়র্কের অদূরে একটি দ্বীপ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রায়ান গ্রানশো।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে মামলার বাদীর বাড়িতে বোমা মারার হুমকিসহ আদালত অবমাননার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের নামে হুলিয়া (পলাতক আসামিকে হাজিরের নোটিশ) জারি করেন নিউইয়র্ক পুলিশ। নিউ ইয়র্কের কুইন্স কাউন্টি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ইলিয়াসকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য তার বাড়ির দরজা ও শহরের বিভিন্ন স্থানে ‘ধরিয়ে দিন’ পোস্টার লাগান।
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মিল্টন জ্যাকব ও প্রিমা রব্বনীর কুইন্স কাউন্টির ক্রিমিনাল আদালতে দায়ের করা মামলায় ১ ফেব্রুয়ারি তিনি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে গেলে তাকে আটক করা হয়। আটকের ৬ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয় আলোচিত এ সাংবাদিককে। ১৭ জানুয়ারি সশরীরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি। ফলে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগ রয়েছে ২০ জানুয়ারি দুপুরে মামলার অপর বাদী মিল্টন জ্যাকবকে ফোন করে তার বাড়িতে বোমা নিয়ে আসবেন বলে হুমকি দেন ইলিয়াস। জ্যাকব মিল্টন ও প্রিমা রব্বনীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছাড়েন ইলিয়াস, যা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। তবে ভিডিওটি মানহানিকর ও ভিত্তিহীন দাবি করে মিল্টন ও প্রিমা রব্বনী সিভিল ও ক্রিমিনাল আইনে ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। ১৭ জানুয়ারি সশরীরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল তার।
সম্প্রতি জ্যাকব মিল্টন ও নিরু নীরাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বানান ইলিয়াস। ভিডিওটিকে মানহানিকর ও ভিত্তিহীন দাবি করে মিল্টন ও নিরু ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে সিভিল ও ক্রিমিনাল আইনে মামলা করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত।
এছাড়া মিতু হত্যা মামলা নিয়ে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার ধানমন্ডি থানায় পালিয়ে থাকা সাংবাদিক ইলিয়াস ও বাবুল আক্তারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।
এদিকে, আদালতে আত্মসমর্পণ করে ইলিয়াসের জামিন আবেদনের শেষ দিন ছিল ১ ফেব্রুয়ারি। এ দিন নিউইয়র্কে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান ইলিয়াস। পরে তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো জামিনযোগ্য হওয়ায় ওইদিন (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি ইলিয়াস হোসেনের আদালতে হাজিরার দিন পুর্বধার্য করা ছিল বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।