নিজের সুবিধামতো বাড়ি নির্মাণ বাড়ছে রাজশাহী নগরীতে। মানা হচ্ছে না ভবন নির্মাণ আইন। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা কেবল নকশায়, বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই। অনেকেই নিজেদের সুবিধামতো নির্মাণ করছে নানা ডিজাইনের বাড়ি। অভিযোগ রয়েছে- অনেক বাড়ির মালিকের কাছে আরডিএর অনুমোদিত নকশা আছে। কিন্তু বছর পেরুলেও তাতে ভাঁজ পড়ে না। নকশা যেভাবে অনুমোদন করিয়ে আনা হয়, সেভাবেই থাকে। আর সাইড ইঞ্জিনিয়ারের কাছে থাকা নিজেদের মতো করে তৈরি করা নকশা দিয়ে করা হয় ভবন নির্মাণ। সরেজমিনে গিয়ে এমনই এক বাড়ির দেখা মিলেছে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) আওতাধীন নগরীর ১২ নং ওয়ার্ডের রানীবাজার টাইলস পট্টি এলাকায়।
যৌথভাবে ভবনটির মালিকানায় আছেন মো: পাভেল, তার মা ও বোন। নকশার বিচ্যুতি ঘটিয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনের ওপর বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করছেন তারা। এ ঘটনায় গত শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) অথরাইজড শাখার বিল্ডিং ইন্সপেক্টর আরিফ হোসেন নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দিলেও তা মানা হচ্ছে না। বরং নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনটির সামনে ৬ফিটের একটি ড্রেন রয়েছে। এই ড্রেনের মাধ্যমে মিয়াপাড়া, রানীবাজার বাটার মোড়, সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট, আলুপট্টিসহ মধ্য নগরীর অধিকাংশ এলাকার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ড্রেনটির দৈঘ্য ২০ ফিট ও প্রস্থ ৬ ফিট অংশ ঢালাই করে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। তবে ড্রেনের যে অংশটুকু দখল করে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে তা নিজের বলে দাবি করছেন জমির মালিক পাভেল ইসলাম ও তার অংশীদারেরা।
ভবন মালিক পাভেল ইসলাম বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনের যে অংশটুকু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে বলা হচ্ছে অধিগ্রহণ করেনি করপোরেশন। কারণ ওই অংশটি আমাদের নিজস্ব জমি। এছাড়া পানি প্রবাহ বন্ধ না করে ভবন নির্মাণ করার অনুমতি দিয়েছে কর্পোরেশন।
আরডিএ নকশা অনুমোদনের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমারা রেকর্ড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করছি। এ বিষয়ে আরডিএ কোন ব্যবস্থা নিলে তা পরে দেখা যাবে।
এব্যাপারে রাসিকের ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, ড্রেনের ওপর ভবন নির্মাণের বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীকে অবগত করা হয়েছে। তিনি ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি যতটুকু জানি ড্রেনের জমিটি তাদের নিজের।
রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর ইসলাম তুষার বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছিল। এছাড়া কাগজপত্র যাচাই করে দেখা হয়েছে, ড্রেনের জমিটুকু তাদের নিজস্ব। বিল্ডিং নির্মাণের ব্যাপারে আরডিএ অথরাইজড শাখা দেখে। তাই তাদের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
আরডিএর অথরাইজড অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে মৌখিকভাবে কাজ বন্ধের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নকশার বিচ্যুতি ঘটিয়ে ড্রেনের ওপর অবৈধ ভবন নির্মাণ কেন ভেঙে ফেলা হবে না এই মর্মে তাদের বিরুদ্ধে একটি আইনি নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।