যেসব খাবার খেলে বাড়বে হ্যাপি হরমোন


ফারহানা জেরিন , আপডেট করা হয়েছে : 07-02-2024

যেসব খাবার খেলে বাড়বে হ্যাপি হরমোন

মানবশরীরের অনেকগুলো হরমোনের মধ্যে চারটি মৌলিক হরমোন হলো ডোপামিন, সেরোটোনিন, অক্সিটোসিন ও এন্ডোরফিন- এগুলোই হ্যাপি হরমোন। শরীরে এদের মাত্রা বেড়ে গেলে আমরা হাসি-খুশি এবং প্রাণবন্ত থাকি। আর কমে গেলে এর উল্টোটা ঘটে অর্থাত্‍ মন খারাপ হয়। খাবার-দাবারের পাশাপাশি কিছু অভ্যাস আমাদের শরীরে হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়।

তো এবার জেনে নিই- যেসব খাবার খেলে বাড়বে হ্যাপি হরমোন

(১) মাশরুম: মাশরুম উদ্ভিজ্জ ভিটামিন ডি এর ভালো উত্‍স। বিষণ্নতারোধী গুণাবলির জন্য সর্বজন পরিচিত এটি। মেজাজ নিয়ন্ত্রণে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার সেরোটোনিন সংশ্লেষণের সঙ্গে যুক্ত, যা আপনার মানসিক অবস্থাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সবার পছন্দের পিত্‍জা, পাস্তা, নুডলস, চাউমিন, স্যুপ থেকে শুরু করে সুস্বাদু স্টার-ফ্রাইতেও মাশরুম বহুল ব্যবহৃত। আপনি চাইলে মাশরুমের আচার তৈরি করে সংরক্ষণও করতে পারেন।

(২) অ্যাভোকাডো: স্বাদের পাশাপাশি অ্যাভোকাডো পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ভিটামিন বি৩ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ এই ফল বাংলাদেশে একটু কম সহজলভ্য হলেও কমবেশি সব সুপারশপে পাওয়া যায়। অ্যাভোকাডো সেরোটোনিন উত্‍পাদনে অবদান রাখে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে মন ভালো রাখার সঙ্গেও আছে এর সম্পর্ক। সালাদ, স্যান্ডউইচ বা স্ন্যাক হিসেবে অ্যাভোকাডো রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়।

(৩) চেরি টমেটো: ক্ষুদ্র অথচ শক্তিশালী চেরি টমেটোতে লাইকোপেন নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপস্থিত। আপনার মেজাজকে প্রফুল্ল রাখতে সক্ষম এই চেরি টমেটো। লাইকোপিনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিষণ্নতার লক্ষণগুলো হ্রাস করে আপনাকে রাখবে হাসিখুশি। বাচ্চাদের খাবার আকর্ষণীয় ও পুষ্টিকর করতে রাখুন চেরি টমেটো।

(৪) ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে পাওয়া যায় শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আপনার মেজাজ প্রফুল্ল করার প্রাকৃতিক ক্ষমতা রাখে। এ ছাড়া এতে আছে ট্রিপটোফ্যান, সেরোটোনিন নামক উপাদান, যা সুখ এবং শিথিলতার অনুভূতিতে অবদান রাখে। পছন্দের খাবারের তালিকায় ডার্ক চকলেট রাখতে পারেন।

(৫) বাদাম (কাজুবাদাম ও আখরোট): বাদাম বা আখরোট জাতীয় খাবারেও রয়েছে সেরোটোনিন ও ট্রিপটোফ্যান নামক উপাদান, যা মানসিকভাবে স্বস্তি দেয়। এ ছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে, যা বিষণ্নতার ঝুঁকি কমায়। সকালের নাশতা এবং দুপুরের খাবারের মাঝে স্ন্যাক হিসেবে বাদাম রাখুন। অথবা খাবারের সময় সালাদেও বাদাম ব্যবহার করতে পারেন।

(৬) পালংশাক: পালংশাক ফাইবার, ভিটামিন ই ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে পালংশাক স্বাস্থ্যকর হরমোন উত্‍পাদন করে। সালাদ হিসেবেও পালংশাক খেতে পারেন অথবা অন্যান্য শাকের মতো রান্না করেও খেতে পারেন।

(৭) বেরি জাতীয় ফল: স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাস্পবেরিসহ বেরিগুলো শুধু সুস্বাদু নয়; বরং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এই পুষ্টিকর বেরিগুলো মেজাজ ভালো রাখতে এবং বিষণ্নতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলো স্মুদিতে বা সকালের ওটসের টপিং হিসেবে খেতে পারেন।

(৮) কলা: কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ শর্করা, ভিটামিন এ, বি, সি ও ক্যালসিয়াম, লৌহ ও পর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি সেরোটোনিন এবং ডোপামিন উত্‍পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। নিউরোট্রান্সমিটারগুলো মেজাজ নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত কলা খেয়ে আপনি নিজেকে প্রফুল্ল আর সুস্থ রাখতে পারেন।

(৯) ওটস: ওটস একটি জটিল কার্বোহাইড্রেট। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তা ছাড়া সারা দিনের শক্তির জোগান দেয়। ওটসে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে স্থিতিশীল রাখে। ওটস এতটাই স্বাস্থ্যকর খাবার যে একে সুপারফুডও বলা হয়।

(১০) মসুর ডাল: মসুর ডালকে প্রোটিনের পাওয়ার হাউস বলা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার রয়েছে। এতে থাকা ডোপামিন এবং সেরোটোনিন মেজাজ নিয়ন্ত্রণ এবং সামগ্রিক সুস্থতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় বিভিন্নভাবে মসুর ডাল খেতে পারেন।উল্লেখ্য, সঠিক খাদ্যাভ্যাস আপনার সুখ ও স্বাস্থ্যের ওপর শক্তিশালী প্রভাব ফেলতে পারে। এবং প্রয়োজনীয় খাবার শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকেও উন্নত করতে পারে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]