বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ১৩০টি ট্রেন চলাচল করে। সম্প্রতি এসব ট্রেনে যাত্রী নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে। রেললাইন খুলে ফেলা থেকে শুরু করে বগিতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় হতাহত হন অনেকে। এছাড়া চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনাও রয়েছে।
এসব অনাকাঙ্খিত ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী ট্রেনের স্বাভাবিক গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরও দুর্ঘটনা পিছু ছাড়ছে না রেলযাত্রীদের। যাত্রী নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এবার ২৪টি ট্রেনে সিসি ক্যামেরা সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রেল কর্মকর্তারা বলছেন, এ কাজ বাস্তবায়ন শুরু হবে শিগগিরই।
জানা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ২৪টি ট্রেনে সিসি ক্যামেরা সংযোজন করা হবে। রেল কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ উদ্যোগ রেলযাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ঝুঁকি হ্রাস ও ট্রেনের শৃঙ্খলা ফেরাতে সহায়তা করবে। নাশকতার মতো পরিকল্পিত ঘটনা কমবে এবং জড়িতদেরও দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। একে ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন যাত্রীরাও।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, চলন্ত ট্রেনে নাশকতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে। কয়েকটি ট্রেনের চাইনিজ র্যাকের ভেতরে ও বাইরে আগে থেকেই ক্যামেরা রয়েছে। এগুলোর জন্য মনিটর সংযোগ স্থাপন করতে হবে। বাকি ট্রেনগুলোর বাইরে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে এসব ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শেষ করব।
জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী ও লালমনিরহাট ডিভিশন থেকে দৈনিক ১৩০টি ট্রেন চলাচল করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। এসব ট্রেনে আসা-যাওয়া করেন লক্ষাধিক যাত্রী। শুধু রাজশাহী স্টেশন থেকে দিনে ৩৭ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনে ৫০ হাজার যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন।
রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী বিরতিহীন বনলতা, আন্তঃনগর ধূমকেতু, সিল্কসিটি ও পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়াও চিলাহাটি-খুলনা-চিলাহাটির মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এছাড়া পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, লালমনি, নীলসাগর ও একতা এক্সপ্রেস ট্রেন সিসি ক্যামেরার আওতায় আসবে। পরে পর্যায়ক্রমে অন্য ট্রেনগুলোতেও সিসি ক্যামেরা দেওয়া হবে। তবে পশ্চিমাঞ্চলের ৫৫টি মেইল ও ৩০টি লোকাল ট্রেন সিসি ক্যামেরার আওতায় আসবে না। এসব ট্রেন স্বল্প দূরত্বে চলাচল করে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ কমান্ড্যান্ট আশাবুল হক বলেন, রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী বা আরএনবির সদস্যরা রেলপথ, ট্রেন ও স্থাপনা ছাড়াও যাত্রী ও মালামালের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। আরএনবি সদস্যের স্বল্পতা থাকলেও তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ট্রেনে সিসি ক্যামেরা বসানো হলে যাত্রী নিরাপত্তা আরও বাড়বে।