রাজশাহীর তানোরে গভীর নকুপের কমান্ড এরিয়ায় স্থাপিত অবৈধ মটরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
কৃষকেরা জানান, পল্লী বিদ্যুতের কতিপয় কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে অবৈধ মোটরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছেন। এদিকে অবৈধ মোটরে উচ্চহারে সেচ বাণিজ্যে কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। অবৈধ সেচ বাণিজ্যে বন্ধে এসকল মোটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা না হলে, যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে শঙ্কিত হয়ে উঠেছে কৃষকেরা।
স্থানীয়রা জানান, তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) কুন্দাইন গ্রামের ইউসুফ আলী শিবপুর মৌজায় ডিপের কমান্ড এরিয়ায় একটি পুকুর পাড়ে মৎস্যচাষের নামে মিনি ডিপ স্থাপন করেছেন। কিন্তু নীতিমালা লঙ্ঘন করে আন্ডারগ্রাউন্ড নির্মাণ করে স্কীমে সেচ বাণিজ্যে করছেন। ব্যক্তিগত মোটর হওয়ায় তিনি নিজের ইচ্ছেমতো সেচ চার্জ আদায় করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, ড্রেন মেরামত, ভোল্টেজ বাড়ানো-সহ নানা অজুহাতে কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এতে কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারছেন না। কেউ প্রতিবাদ করলে তার জমিতে সেচ দেয়া বন্ধ করে দিচ্ছেন। অন্যদিকে বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) শসানতলা গ্রামের শাহজাহান আলী তার বাড়ি থেকে আবাসিক সংযোগ দিয়ে সেচ বানিজ্যে করছে।
কৃষকেরা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা সরাসরি নৌকার বিপক্ষে ভোট দিতে কৃষকদের বাধ্য করেছেন। যারা নৌকায় ভোট দিবেন তাদের জমিতে সেচ দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়া হয়। ফলে কৃষকেরা বাধ্য হয়ে নৌকার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে আলোচনা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, তানোর পল্লী বিদ্যুৎ যথারীতি এসব অবৈধ মোটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে জরিমানার নামে বাণিজ্য করছে। অথচ সেচ নীতিমালা অনুয়ায়ী খাবার পানির মোটর থেকে কৃষি জমিতে সেচ দেয়া হলে সেই মোটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা। এসব অবৈধ মোটরের কারণে বিএমডিএ’র অধিকাংশ গভীর নলকুপ লেয়ার ফেল করে অকেজো হয়ে পড়েছে।
এব্যাপারে বিএমডিএ’র তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় সেচ মোটর স্থাপনের কোনো সুযোগ নাই। তাছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার তো প্রশ্নই আসে না, এমনকি খাবার পানির মোটর থেকে কৃষি জমিতে সেচ দেয়া যাবে না।
এব্যাপারে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি’র তানোর এরিয়া ম্যানেজার (ডিজিএম) জহুরুল ইসলাম বলেন, মৎস্যচাষ বা খাবার পানির মোটর থেকে কৃষি জমিতে সেচ দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।