বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত নিম্নমূখী, বেঙ্গল ডেলটা প্ল্যান দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি


মঈন উদ্দিন , আপডেট করা হয়েছে : 23-03-2022

বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত নিম্নমূখী, বেঙ্গল ডেলটা প্ল্যান দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি

বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে। পানির স্তর ক্রমাগত নিম্নমূখী হচ্ছে। এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জাতীয় গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় কম হওয়ার কারণে পানির স্তরবর্ষা মৌসুমে আর আগের জায়গায় উঠে আসছে না। এরমধ্যে ভূগর্ভস্থ পানি যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে প্রতিদিন ৯৫ হাজার ঘনমিটার পানি তুলছে রাজশাহী ওয়াসা। ফলে ভয়াবহ খরা প্রবণ এ এলাকার পানির সুরক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে না।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও পানি বিশেষজ্ঞ চৌধুরী সারওয়ার জাহান সজল সাংবাদিকদের বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বরেন্দ্র অঞ্চলে অধিক পরিমাণ ধান চাষ হচ্ছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে। এ কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত নিম্নমূখী হচ্ছে। তিনি বলেন, জাতীয় বৃষ্টিপাতের গড় ২ হাজার ৫০০ মিলিমিটার। বরেন্দ্র অঞ্চলে ১ হাজার ২০০ মিলিমিটার বা কোনো কোনো এলাকায় তারও কম বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে চাষাবাদের প্রয়োজনে যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে, সেই পরিমাণ পানি আর বর্ষা মৌসুমে ওপরে উঠছে না। ফলে পানির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। 

চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, সাম্প্রতিক কালের পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা পানির নীতি ২০১৩ এবং পানি বিধি ২০১৮ বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করেছে। কিন্তু পানির স্তর দ্রুত নিম্নগামী হচ্ছে। এ কারণে এ কার্যক্রমকে আরও জোরদার করা দরকার; যাতে আগামী ১০০ বছরের জন্য যে বেঙ্গল ডেলটা প্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়।

এদিকে ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে প্রতিদিন ৯৫ হাজার ঘনমিটার পানি তুলছে রাজশাহী ওয়াসা। তবে এই পানি মোটেও নিরাপদ নয়। অতিমাত্রার ধাতব পদার্থসহ এই পানিতে রয়েছে ডায়রিয়ার জীবাণু ফেকাল কোলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া। এর বিকল্প হিসেবে পদ্মার পানি শোধনের মাধ্যমে রাজশাহী নগরে সরবরাহ করার উদ্যোগটি চার বছরেও পায়নি আলোর খোঁজ। প্রকল্প বাস্তবায়নে এখনও হয়নি চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক চুক্তি।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জানায়, ভূ-গর্ভস্থ পানি ছাড়া রাজশাহীতে এখনও বিকল্প কোনো পানির উৎস নেই। এ কারণে অতিমাত্রায় ধাতব পদার্থ পাওয়া গেলেও পানি তোলা হচ্ছে ওই ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকেই। ফলে পানির স্তরনিচে নেমে যাওয়াসহ পরিবেশের জন্যও হুমকি দেখা দিয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান বলেন, প্রতিদিন মাত্রাতিরিক্ত পানি তোলার ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। তবে কয়েকবছর বেশি বৃষ্টি হওয়ায় রিচার্জও হচ্ছে। নিরাপদ খাবার পানির চাহিদা মেটাতে হলে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার ছাড়া বিকল্প নেই। এ কারণেই ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারে জোর দেওয়া উচিত।

রাজশাহীর সময়/এএইচ

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]