গত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারী) দুপুরে মোঃ ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট নামের এক সাংবাদিকের সাথে মারমুখী আচারণ করা সেই আনসার সদস্য সুজনকে বহিস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন রামেক হাসপাতাল পরিচালক।
শনিবার (২৭ জানুয়ারী) রাতে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, আনসার বাহিনীর পরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আনসার সদস্য সুজনকে বহিস্কার করা হবে। ইব্রাহীম হোসেন সম্্রাট, তিনি দৈনিক সময়ের কাগজ ও সাপ্তাহিক বাংলার বিবেক পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি রাজশাহী রিপোর্টার্স ইউনিটির (আরআরইউ), ও রিভার সিটি প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা যায়, সাংবাদিক সম্রাটের শ্বাশুড়ী গত ৯দিন যাবত রামেকের (৮ নং) ওয়ার্ডে বারান্দার ৪নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারী) দুপুরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ছুটি দেন। ছুটির পর জরুরী বিভাগে ট্রলি কাউন্টারে আনতে যান সাংবাদিক সম্রাট। আনসার সদস্যকে বলেন, ভাই আমার একটা ট্রলি লাগবে। তিনি বলেন যে কোন একটা ট্রলি বেছে নেন। একটি ট্রলি নেওয়ার পর ১০০ টাকা চায় আনসার সদস্য সুজন। যাহা ফেরতযোগ্য। ভাংতি টাকা না থাকায় তাকে ৫০০ টাকার একটি নোট দেন তাকে। এ সময় আনসার সদস্য সুজন বলেন আপনি ভাংতি টাকা দেন। ভাংতি টাকা নাই বলেন সে ৫০০ টাকার নোটটি রেখে ৪০০ টাকা ফেরত দেয়। বলেন, ট্রলি জমা দেয়ার সময় আপনাকে ১০০ ফেরত দিতে পারবো না। ইচ্ছা হলে ট্রলি নেন নইলে যান। ওই সময় সম্্রাট নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন আমি পরিচালক স্যারকে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আনসার সদস্য সুজন বলেন, যা পারবেন করে নিয়েন। এরপর ট্রলি নিয়ে সম্রাট (৮নং) ওয়ার্ডে তার শ্বাশুড়ীকে আনতে যায়। ফিরে এসে ট্রলি জমা দিলে আনসার সদস্য সুজন ১০০ টাকা জন্য জবর দোস্তি করে এবং খারাপ ব্যবহার করা-সহ মারমুখি আচারণ করে। এরপর সাংবাদিক সম্রাট আনসার ইনচার্জের নিকট গিয়ে অভিযোগ করেন। আনসার ইনচার্জ ঘটনাস্থলে এসে সমাধান না করে উল্টা নিজেও সহকর্মীর পক্ষ নিয়ে বলেন, আপনি সাংবাদিক হয়েছেন তো কি হয়েছে ? আপনি প্রেসিডেন্ট নাকি? ইনচার্জের উগ্রতা দেখে সেখানে ৭/৮জন আনসার সদস্য সাংবাদিককে ঘিরে মারমুখি আচারণ করে এবং পরিচালকের মোবাইল নম্বর দিয়ে বলে ফোন দিয়ে যা ইচ্ছা বলেন।
সার্বিক পরিস্থিতি দেখে রামেক পুলিশ বক্সের এএসআই আমিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিক সম্রাট হোসেনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনায় দৈনিক বার্তা ও দৈনিক সময়ের কাগজ পত্রিকা-সহ একাধীক অনলাইন নিউজ পোর্টালে একটি সংবাদ প্রকাশিক হয়।
এ ব্যপারে শনিবার দুপুরে সাংবাদিক সম্রাট আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে রামেক পরিচালক বরারর একটি অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগটি অমলে নিয়ে রামেক পরিচালক এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে আনসার সদস্যদের চোখ রাঙ্গানী, দূব্যবহার, চিৎকার চেচামেশি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতাল অভ্যান্তরে তারা নিজেদেরকে ক্ষমতাধর ভাবে। আর তাই তারা কাহারো সাথে খারাপ ব্যবহার করার পরে কেউ পাল্টা প্রতিবাদ করলেই মুঠো ফোনে অনত্রে ডিউটিতে থাকা আনসার সদস্যদের ডেকে একত্রিত হয়ে রিতিমত সন্ত্রাসী ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়। নিজের দোষ চাপা দিতে মিথ্যা কথা তৈরী করে রোগী ও রোগীর স্বজনদের অপরাধী সাজিয়ে ব্ল্যাক মেইল করে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে।