তানোরে কৃষি জমি ধ্বংস করে অবৈধ পুকুর খনন


তানোর প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 26-01-2024

তানোরে কৃষি জমি ধ্বংস করে অবৈধ পুকুর খনন

রাজশাহীর তানোরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ৩০ বিঘা কৃষিজমিতে চলছে অবাধে পুকুর খনন। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমির ধ্বংসযজ্ঞ চললেও অজ্ঞাত কারণে সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে নির্বিকার।

অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা স্থানীয় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে রাতের আঁধারে পুকুর খননের কাজটি করছেন। আর চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করছেন উপজেলা প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা।

এলাকার কৃষক ও ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, এর ফলে ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি পুকুরসংলগ্ন জমিও বছরের অর্ধেক সময় পানির নিচে থাকবে। ফলে ধান চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। এসব জমির ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হবেন কৃষক। এলাকার অনেক কৃষক জীবন এবং জীবিকা নিয়ে সংকটে পড়বেন। এছাড়া ইতোমধ্যে খননের কাজ চলা পুকুরের পাশে গত বছর আরও কয়েকটি পুকুর রয়েছে। এসব পুকুর মিলে প্রায় চারশ' বিঘা কৃষিজমি ধ্বংস করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২৩ জানুয়ারি তানোরের চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের (ইউপি) চাঁন্দুড়িয়া মোড় সংলগ্ন প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে পুকুর খনন শুরু করেন রাজশাহী নগরীর মেহের চন্ডি পুর্বপাড়ার হাসান আলী। তানোর-বায়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে এমন অবৈধ পুকুর খনন করা হলেও সংশ্লিষ্টরা নিশ্চুপ।

স্থানীয়রা বলছেন, চাঁন্দুড়িয়া  ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেছেন। এ কারণে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি পুকুর খননের কাজটি অব্যাহত রেখেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান  বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেটি সঠিক না। পুকুর খননের বিষয়টি আমি জানি। তবে এর সঙ্গে আমি সংশ্লিষ্ট না। তাছাড়া ওই মাঠে ধানের ফলন সেভাবে হয় না। এ কারণে হয়তো পুকুর খনন করছে। এর অনুমতি দিয়েছেন উপজেলা ভুমি অফিস। গত ২৪ জানুয়ারী বুধবার রাতে সরেজমিন দেখা গেছে, রাত ১০টায় পুকুর খননের কাজ চলছে। তবে সে সময় মালিক হাসান আলী সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এক্সকেভেটর চালক খননের কাজটি করছিলেন। আর এ কাজে তাকে সহায়তা করছিলেন চেয়ারম্যানের ভাতিজি জামাই রাকিব হোসেন। রাতের অন্ধকারের কারণে মাঠের মধ্যে পুকুরের আয়তন সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে পরদিন বৃহস্পতিবার  সকালে সরেজমিন সেখানে গেলে পুকুর খননের বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে স্পষ্ট হওয়া যায়। দেখা গেছে, ইতোমধ্যে পুকুর খননের শতকরা ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। কৃষিজমিতে পুকুর খননের ফলে ওই মাঠের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে তারা জানিয়েছেন। পুকুর সংলগ্ন জমির মালিক  বলেন, আমার তিন বিঘা জমি রয়েছে। বোরো এবং রোপা ধান চাষ করা হয়। পুকুর খননের ফলে বর্ষা মৌসুমে এ মাঠের পানিপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি হবে। জলাবদ্ধতার কারণে জমি বছরের অর্ধেক সময় পানির নিচে থাকবে। ফসল ফলবে না। এ কারণে এ মাঠের কৃষকেরা সমস্যার মধ্যে পড়বেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, যারা কৃষি জমি ধ্বংস অবৈধ পুকুর খনন করছে তারা দুষ্কৃতকারী। এদের বিষয়ে কোনো ছাড় নাই। তিনি বলেন, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলবেন। এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোনে কলগ্রহণ না করায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবিদা সিফাতের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, পুকুর খননের বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে প্রশাসন থেকে নির্দেশনা পেলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে হাসান আলী বলেন, তিনি উপজেলা ভুমি অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে পুকুর খনন করছেন।#


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]