রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গত কয়েকদিন ধরে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। প্রচন্ড শীতের পাশাপাশি বইছে মৃদু বাতাস ফলে শীতের তীব্রতা যেন আরও জেঁকে বসেছে। শীতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে গরম কাপড়ের চাহিদাও। স্বল্প মূল্যে শীতের গরম কাপড় কিনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা তবে সেখানে নারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ঢেড়। এদিকে শীত বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনাও বেড়েছে দোকানীদের।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়ায় মন্নুজান হলের সামনে এমন চিত্র দেখা যায়। সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলে এসব বেচাকেনা। তবে প্রতিদিন বিকেল নারী শিক্ষার্থীদের ভিড় থাকে বলে জানিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ দোকানের বিক্রেতারা।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হলের সামনে ও মেয়েদের হলে যাওয়ার রাস্তার আশেপাশে শীতের গরম কাপড় নিয়ে প্রায় ২০টি ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছেন। এসব দোকানে শীতের বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় উঠেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী গরম কাপড় স্বল্প মূল্যে ক্রয় করতে এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো থেকে। নারী শিক্ষার্থীদের ভিড়ে জমে উঠেছে গরম কাপড়ের এসব দোকান। এদিকে শীতের তীব্রতা কিছুটা বেশি হওয়ায় বেচাকেনাও বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে আগের থেকে এবার কিছুটা গরম কাপড়ের দাম বেড়েছে বলে জানান তারা।
নারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহেব বাজার ও নিউমার্কেট অনেকটা দূর হওয়ায় ক্যাম্পাসের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো থেকেই তারা গরম কাপড় কিনছেন। এবং এখানে মার্কেটের তুলনায় পছন্দের শীতের পোশাক স্বল্পমূল্যে পাচ্ছেন তারা। কাপড় পছন্দ হলে ক্রেতাদের সাথে দাম চুকিয়ে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০-১০০০ টাকা দামের মধ্যেও ভালো মানের কাপড় কিনতে পারছেন বলে জানান তারা।
গরম কাপড় ক্রয় করতে আসা লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম তুহিনা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েকদিন ধরে খুব বেশি ঠান্ডা পড়েছে। তাই গরম কাপড় কিনতে এখানে এসেছি। এখানে প্রায় অনেকগুলো গরম কাপড়ের দোকান এখানে বসেছে। পছন্দ মতো কাপড় স্বল্প মূল্যে এখানে পাওয়া যাচ্ছে। পছন্দ হলে একটি শীতের কাপড় নিবো বলে জানান এ শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাথী আক্তার বলেন, এখানে শিক্ষার্থীবান্ধব বাজেটে বেশ ভালো ভালোমানের শীতের গরম কাপড় পাওয়া যায়। এই দোকানগুলোতে সবসময়ই ভিড় লেগে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহভাগ মেয়েরা এখান থেকে কাপড় কিনেন বলে আমার মনে হয়। মেয়েদের হলগুলোর সামনে দোকান গড়ে উঠায় একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে অন্যদিকে মামারাও উপার্জনের একটি উৎস পেয়েছে। এসব দোকানে মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীরা অতীব প্রয়োজনীয় শীতের কাপড় স্বল্পমূল্যে ক্রয় করতে পারেন বলে জানান তিনি।
আগের থেকে বেচাকেনা অনেকটাই বেড়েছে জানিয়ে বিল্লাল হোসেন নামের এক বিক্রেতা বলেন, শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার বেচাকেনা আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। কাপড় ক্রয় করতে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যাটাও বেড়েছে তবে এ বছর গরম কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, শীতে এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের জন্য খারাপ। ভ্রাম্যমাণ দোকান মালিকদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট জায়গার জন্য আবেদন করে প্রশাসন কর্তৃক নিদিষ্ট জায়গায় বসতে আহবান জানান তিনি।