কোল্ড ইনজুরিতে বীজতলা নষ্টের শঙ্কায় রাজশাহীর কৃষকরা


স্টাফ রিপোর্টার , আপডেট করা হয়েছে : 15-01-2024

কোল্ড ইনজুরিতে বীজতলা নষ্টের শঙ্কায় রাজশাহীর কৃষকরা

শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলায় কোল্ড ইনজুরিসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে চাষিদের বোরো ধানের বীজতলার চারা লালচে, হলুদবর্ণ ধারণ করেছে। 

এমন অবস্থায় চাষিরা ক্ষতির শঙ্কার কথা জানালেও কৃষি অফিস বলছেন, ধানের বীজ জমিতে বপনের উপযোগী হয়ে গেছে। তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে কুয়াশা থেকে রক্ষায় পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। বর্তমানে যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তাতে এটুকু হওয়া স্বাভাবিক। এতে শঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। কিছু বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। রাজশাহী জেলায় বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবছর বেড়েছে বোরো ধানের চাষ। এ বছর রাজশাহী জেলায় বোরো ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ১৬৫ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হবে হলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা। রাজশাহী জেলায় এখন পর্যন্ত বোরো ধানের চাষ হয়েছে ১ হাজার হেক্টর।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের লতিফা হেলেন বলেন, রাজশাহীতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। গত কয়েকদিন থেকে রাজশাহীর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে। এছাড়া সন্ধ্যার পরে বাতাস বইলেও রাত থেকে বেলাভর কুয়াশা পড়েছে। সকাল ৯টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। এছাড়া সন্ধ্যা ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ৮৬ শতাংশ।

জেলার উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বোরোর বীজতলায় কোথাও হলুদ, কোথাও লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। আবার অনেক জায়গায় গাছ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো বীজতলার চারা মারা যেতে শুরু করেছে। তবে কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত বীজতলা সেরে উঠবে। কুয়াশা থেকে রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে।

পবার হরিয়ান ইউনিয়ন এলাকার কৃষক মাসুদ বলেন, কয়েকদিন আগেও বোরো ধানের বীজতলা সবুজ ছিল। কয়েকদিনের তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে ধানের চারার পাতা মরে যাচ্ছে। পুরোবীজ তলায় এমন হচ্ছে। এতে করে বোরো ধানের চারা মারা যাওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। প্রচ- ঠান্ডা আর কুয়াশার জন্যই এমন হচ্ছে। এমন কুয়াশা অব্যাহত থাকলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে।

গোদাগাড়ী উপজেলার আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের কৃষক রসুল বলেন, কয়েকদিন থেকে দুপুরের পরে কিছুটা সূর্যের দেখা মিলছে। তবে নেই রোদের তাপ। সন্ধ্যার পরে থেকে বইছে হিমেল হাওয়া। আর গভীর রাত থেকে পড়ছে কুয়াশা। প্রতিদিন সকালে বোরো ধানের বীজতলায় খেজুরের বার্তা দিয়ে কুয়াশাগুলো ফেলে দিচ্ছি। তার পরেও হলুদ হয়ে গেছে ধানের চারা। এমন অবস্থা আরও কয়েকদিন থাকলে ধানের চারার পাতা মরে যাবে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, এখনও শীতের কুয়াশার কারণে সেই ভাবে বোরো ধানের বীজ তলা নষ্ট হয়নি। সেইভাবে ক্ষতি হয়নি। তবে আমরা কৃষকদের পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। একই সঙ্গে যে কৃষকদের বীজতলার জমিতে পানি জমে আছে সেগুলো নিষ্কাশন করতে হবে। এছাড়া কোনো ধরনের কিটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। তবে আরও কয়েকদিন এমন আবহাওয়া থাকলে বোঝা যাবে আসলে কুয়াশার কারণে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]