আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে সন্ত্রাসী হামলা-ভাংচুর, নিরাপত্তাহীনতায় ব্যবসায়ী


স্টাফ রিপোর্টার : , আপডেট করা হয়েছে : 30-12-2023

আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে সন্ত্রাসী হামলা-ভাংচুর, নিরাপত্তাহীনতায় ব্যবসায়ী

আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে রাজশাহীতে একটি নির্মানাধীন আবাসন প্রকল্পে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে নির্মান প্রকল্পের সাইনবোর্ড সহ অন্যান্য মালামাল ভাংচুর করা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। অন্য একটি আবাসন নির্মান প্রতিষ্ঠানের ইন্ধনে এটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নির্মান প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারি। তিনি নিরাপত্তার জন্য থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগী গ্রীণ প্লাজা রিয়েল এস্টেট কোম্পানী লিমিটেডের সত্বাধিকারি মোস্তাফিজুর রহমান বৃহস্পতিবারের ঘটনা উল্লেখ করে নগরীর দড়িখরবোনা এলাকার আবু হানিফের ছেলে জুবায়ের ইনাম (২০) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৮/২০ জনকে দায়ী করে এবং নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। 

জানা গেছে, নগরীর দড়িখরবোনা এলাকার আবু হানিফ গ্রীণ প্লাজা রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় স্ত্রীর ক্যান্সার অপারেশনসহ চিকিৎসা প্রক্রীয়া সম্পন্ন করা অনেক ব্যয় বহুল হওয়ায় তাদের বসবাসরত বাড়িটি ডেভেলপ করার প্রস্তাব করে প্রাথমিক ভাবে ১ (এক) কোটি টাকা এবং চিকিৎসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আনুসঙ্গিক প্রয়োজনীয় সকল প্রকার খরচের টাকা ১ (এক) কোটিরও বেশি হলে দিতে হবে বলে দাবি করেন যা আমাদের ফ্লাটের প্রাপ্ত অংশ হতে গ্রহণকৃত টাকা সমন্বয় করা হবে। চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পর্যায়ক্রমে টাকা নেয়া শুরু করেন। প্রথমে ভারতের  চেন্নাই বিভিন্ন মেডিকেল পরীক্ষা করান এবং পরবর্তীতে ভারতের বোম্বে জাস লক হাসপাতালে স্ত্রীর অপারেশন ও কেমো থেরাপী, সার্কেল এবং রেডিও থেরাপী ২০২৩ সালের জুন মাসে সম্পন্ন করেন। 

চুক্তিপত্র ও আমমোক্তারনামা সম্পন্ন করা হলেও অন্য এক রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর প্ররোচনায় বিভিন্ন প্রকার প্রয়োজনের অযুহাতে অর্থ দাবী করতে থাকে এবং বিভিন্ন সময় জায়গা না দেয়ার হুমকি প্রদান করে কৌশলে অর্থ গ্রহণ করতে থাকে, এই সমস্ত কারণে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় আবু হানিফ তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের মধ্যে গ-গোল হয়। নিজেদের কুপরিকল্পনা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিভিন প্রতারণামূলক কৌশল অবলম্বন করে প্রায় আড়াই কোটি টাকা নিয়ে, স্ত্রীর চিকিৎসা সম্পন্ন করে আসার ২০২৩ সালের জুলাই মাসে প্রকাশ্যে জায়গা অন্য ডেভলপার কে দিবে বলে ঘোষণা দেয়। 

ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওদের নামে প্রতারনা ও চেকের মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে এবং আবু হানিফ আমার সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও কাজটি আমাকে না দিয়ে অন্য একটি ডেভেলপার কোম্পানিকে জায়গাটি দিয়ে দিতে চায় এবং তারা আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে মূল দলিলসহ সমস্ত ডকমেন্ট ফেরত চায়। আমি তখন তাদেরকে বলি, তাহলে আমার পাওনা টাকা এবং খরচের টাকা ফেরত দিন, তারপর জমির দলিল ফেরত দেব এবং চুক্তি বাতিল করবো। তখন তিনি আমাকে ২০২৩ সালের জুলাই মাসের ৯ তারিখে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকার সেপ্টেম্বর মাসের ২২ তারিখের একটা চেক ও অঙ্গীকারনামা দেন। কিন্তু তার অনুরোধে উক্ত তারিখের আরো কিছু দিনপর ব্যাংকে চেক জমা দিলে সেটি পর্যাপ্ত পরিমান টাকা না থাকায় ফেরত আসে, এখান থেকেই মূলত প্রতারনার শুরু। এরপর তারা আমাকে বলে টাকাও দেব না জমিও দেব না কাজও করতে দেব না। এটা মূলত ঐ ডেভেলপার কোম্পানির ইন্ধনে এবং শক্তিতে করা হয়েছে। সে সময় গত ১০/১০/২০২৩ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালত হতে উক্ত স্থানে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য বোয়ালিয়া থানাকে নির্দেশ প্রদান করে ১৪৫ ধারায় নিষেধাজ্ঞা জারী করেন যা এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে আবু হানিফের নামে একটি প্রতারনা মামলায় গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি হলে, আবু হানিফ ২৮/১২/২০২৩ইং তারিখে গ্রেপ্তার হন, এরই জের ধরে আবু হানিফের প্ররোচনায় তার ছেলে জুবায়ের এর নেতৃত্বে ঐ প্রভাবশালী ডেভেলপার কোম্পানির  একজন পরিচালকসহ ১৮/২০ জন সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় আদালতের আদেশ ১৪৫ ধারা ভঙ্গ করে আনুমানিক সন্ধা ৭টার দিকে প্রকাশ্যে এই সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর করে এবং প্রাননাশের হুমকি প্রদান করে। এছাড়াও প্রকাশ্যে আমাকে গাড়ীসহ পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে মর্মে প্রত্যক্ষীদর্শীরা আমাকে জানান। এই সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুরের ভিডিও চিত্র আমাদের কাছে আছে।

অভিযুক্ত জুবায়ের ইনামকে তার মুঠোফোনে বিভিন্ন সময় গ্রীন প্লাজা রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর স্বত্বাধিকারী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানকে ভয়-ভীতি দেখানো ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মূল দলিলসহ সমস্ত ডকুমেন্ট ফেরত চাওয়া প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তাকে ভয়-ভীতি দিখিয়ে প্রাণনাশের হুমকির বিষয়টি একেবারেই ভিত্তিহীন। তবে এটা সত্য কথা যে আমি আমার আইনজীবীর পরামর্শে আমাদের জায়গায় তার দেওয়া সাইনবোর্ড ভেঙ্গে সরিয়ে ফেলেছি। কারণ ওই সাইনবোর্ড দেওয়ার কোন অধিকার নেই।’ 

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির বলেন, জিডি করে থাকলে সেটির নিয়ম অনুযায়ী আদালতে তদন্তের অনুমতি চাওয়া হবে, অনুমতি পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]