দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) সংসদীয় আসনে এবার প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ে মেইন ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে প্রতিক নৌকা। আগামী ৭ জানুয়ারী রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে নির্বাচনের দিন যতো ঘনিয়ে আসছে ততোই নৌকার জনসমর্থন বাড়ছে।এতে বিপাকে পড়ছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নৌকার বিপক্ষে প্রার্থী হয়ে তারা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিজেদের পক্ষে ধরে রাখতে পারছেন না বলে মনে করছে সাধারণ ভোটারগণ। ফলে নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে প্রার্থী নয় মেইন ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে প্রতিক নৌকা।
অন্যদিকে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বোধদয় হয়েছে এটা স্থানীয় নয় ক্ষমতা পরিবর্তনের নির্বাচন। কাজেই সরকার দলীয় প্রার্থীর বিজয় ব্যতিত এলাকার উন্নয়ন সম্ভব নয়, তারা উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে সরকার দলীয় প্রার্থী তথা নৌকার বিজয় চাই। এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের মাঝে বোধদয় হয়েছে এটা দলের সভাপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রেষ্টিজ। তাই তারা এবার কারো কোনো মোহে বা প্ররোচনায় পড়ে নৌকার বিপক্ষে ভোট প্রয়োগ করবেন না, করতে পারেন না। তাদের অভিমত, ভুল থাকতে পারে প্রার্থী বা কোনো নেতাকর্মীর। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোনো ভুল করেননি, তায় তার সম্মান রক্ষায় তার দেয়া প্রতিক নৌকার বিজয় ব্যতিত বিকল্প নাই। কারণ দলীয় প্রার্থীর পরাজয় ঘটলে কেউ প্রার্থীর পরাজৃয়ের কথা বলবে না, বলবে নৌকার পরাজয় ঘটেছে, আর এটা আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বা কর্মী-সমর্থকের কাম্য হতে পারে না। স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ভাষ্য স্থানীয় সাংসদের জনপ্রিয়তা ও আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মী বাহিনী কাজে লাগাতে পারলে এখানে নৌকার বিজয় প্রায় নিশ্চিত।
তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, সাধারণ মানুষের ভাগ্যর উন্নয়ন এবং উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে নৌকার কোনো বিকল্প নাই, নৌকা হলো উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারক-বাহকের প্রতিক। তিনি বলেন, নৌকার বিজয় মানে স্বধীনতার পক্ষের শক্তি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সাধারণ মানুষের বিজয়, তাই নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের আদর্শ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাসী তারা কখানোই নৌকা প্রতিকের বিপক্ষে কাজ করতে পারেন না, যারা করছে, তারা সুবিধাবাদী তারা কখানোই আওয়ামী লীগের ভালো চাইনি এখানো ভালো চাই না। ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ভুল থাকতে পারে তার বা তার দলের কোনো নেতাকর্মীর, এমনকি প্রার্থীর জানা অজানায় কোনো ভুলক্রটি থাকতে পারে।
কিন্ত্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কোনো ভুল করেননি, তিনি এখানো দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তাই আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে তার মনোনিত প্রার্থীকে বিজয়ী করা।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরী (নৌকা), বিএনএমের শামসুজ্জোহা (নোঙর), বিএনএফের আল-সাআদ (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির জামাল খান দুদু (সোনালী আঁশ), এনপিপির নুরুন্নেসা (আম), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বশির আহমেদ (ছড়ি), জাতীয় পার্টির শামসুদ্দীন (লাঙল), মাহিয়া মাহি (ট্রাক), গোলাম রাব্বানী (কাঁচি), আখতারুজ্জামান আখতার (ঈগল) ও আয়েশা আক্তার ডালিয়া (বেলুন) প্রতীক নিয়ে প্রতিদন্দীতা করছেন।
রাজশাহী-১ আসনে ৪টি পৌরসভা ও ১৬ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজার ২১৮ জন। দুই উপজেলা মিলে ভোটকেন্দ্র ১৫৮টি। ভোটকেন্দ্রের কক্ষের সংখ্যা ৯৯৪ টি। অস্থায়ী ভোট কক্ষের ৫১ টি। নতুন ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩ টি। এআসনে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৫৩ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৫৬৪ জন। একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।
এদিকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে এমপি ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতিক নিয়ে অন্যদের থেকে যোজন যোজন দুরুত্বে এগিয়ে রয়েছেন। জানা গেছে, ২৪ ডিসেম্বর রোববার এমপি ফারুক চৌধুরী তানোর পৌরসভা এবং কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা করেন। এমপির প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে সাধারণ মানুষের স্বত্বঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ তার জনপ্রিয়তারই প্রমাণ দিচ্ছে।