কক্সবাজারে দেশের প্রথম বাণিজ্যিক বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আগামী দুই মাসের মধ্যে ৬০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোদমে উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারি প্রকল্পটির কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রটি পূর্ণ মাত্রায় উৎপাদনে যেতে কিছুটা বাড়তি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব (নবায়নযোগ্য জ্বালানি) নিরোদ চন্দ্র মন্ডল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি প্রায় শেষের পথে।
গত বছরের ৩১ মার্চ ১১৬.৫১ মিলিয়ন ডলারের ব্যয়ের এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পের নেতৃত্বে রয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউএস-ডিকে গ্রিন এনার্জি বিডি লিমিটেড, আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে চীনা কোম্পানি এসপিআইসি উইলিং পাওয়ার কর্পোরেশন।
সমুদ্র উপকূলের কাছে কক্সবাজারে অবস্থিত বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চলতি বছরের ২৬ মে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে।
কাজ শেষ হওয়ার পর প্রকল্পের তত্ত্বাবধানকারী সংস্থাটি ১৯ বছরের ব্যবস্থাপনা চুক্তির অধীনে সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করবে।
কক্সবাজার উপকূলরেখা বরাবর অবস্থিত খুরুশকুল, পিএম খালী, চৌফলদন্ডী ও পোকখালী ইউনিয়নের মতো বেশ কিছু জায়গায় ২২টি টারবাইন স্থাপনের কাজ চলছে। প্রতিটি টারবাইনের সক্ষমতা ৩ মেগাওয়াট।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মুকিত আলম খান টিবিএসকে জানান, প্রকল্পের কাজ ৮৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ১০টি টারবাইন ইতিমধ্যে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, আর পাঁচটি টারবাইন চালু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে, আরও সাতটি টারবাইন স্থাপনের পর্যায়ে রয়েছে।
পুরোদমে চালু হওয়ার পর বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রটি বছরে প্রায় ১৪৫ মিলিয়ন কিলোওয়াট পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। আর কয়লা খরচ ৪৪ হাজার ৬০০ টন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ১ লাখ ৯ হাজার ২০০ টন কমাবে।
এছাড়া কেন্দ্রটি ১ লাখ পরিবারের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের সময় ১ হাজার ৫০০-র বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।
কক্সবাজারের বাইরে সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাট ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১০২ মেগাওয়াট সক্ষমতার আরও কয়েকটি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। চাঁদপুর সদরে ৫০ মেগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং ফেনীর সোনাগাজীতে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিকল্পনাও পাইপলাইনে রয়েছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বাগেরহাটের মোংলায় একটি ৫৫ মেগাওয়াটের বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য মোংলা গ্রিন পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে।