বিশ্ব আরবী ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াতে আরবী একাডেমি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।
আরবী একাডেমির নির্বাহী পরিচালক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদের সভাপতিত্বে এবং হাফিজুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় এ সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহা. সাখাওয়াত হোসেন, আরবী বিভাগের প্রফেসর মো. মতিউর রহমান-২, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খানম, উর্দু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.সামিউল ইসলাম এবং আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. কামারুজ্জামান। আরও বক্তব্য রাখেন আব্দুল্লাহ নীল, হুমায়রা বুশরা, শরীফুল ইসলাম, আব্দুল ওয়াহেদ প্রমূখ।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, আরবী সাহিত্য ও শিল্পকলার ভাষা হিসেবে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধারাবাহিক অবদান রেখে আসছে। এ ভাষায় বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সাহিত্য রচিত হয়ে থাকে। ২২টি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ভাষা আরবী। আরবীর সাথে এ জনপদের মানুষের সম্পর্ক অতি নিবিড়। আরবী পৃথিবীর একমাত্র প্রাচীনতম ভাষা যেটি বিস্ময়করভাবে বিবর্তনমুক্ত থেকে আজ অবধি দাপটের সাথে টিকে আছে। বর্তমান সময়ের চাহিদা পূরণ করে এ সম্পর্ককে আরও বহুমাত্রিক পর্যায়ে নিতে আরবী শিক্ষিতদের এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরবী কবিতা ও শিল্পকলার দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ঐতিহ্য তুলে ধরেন।
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুমাইয়া খানম বলে, ভাষা আমাদের অনুভূতিকে প্রচার করার বাহন। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। তাই আমরা এ ভাষায় কথা বলে থাকি। ধর্মীয় দিক থেকে আরবি আমাদের আত্মায়, রক্তে ও সত্ত্বার মধ্যে রয়েছে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের ইংরেজি ভাষাও শিখতে হবে। কারণ ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা হওয়ায় সকল ক্ষেত্রেই আমাদের ইংরেজি প্রয়োজন। তিনি বলেন, শুধু আরবিতে নয় যারা বাংলায় পড়াশোনা করেন তারাও অনেক সময় হীনম্মন্যতায় ভোগেন। কিন্তু এমন হীনম্মন্যতায় ভোগার কোনো কারণ নেই। আমি ভাষার মাধ্যমে কী বুঝাচ্ছি সেটাই মূল বিষয়। সেটা যেকোনো ভাষায় হোক।
ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহা. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আরবী ভাষা বিশ্বে জীবন্ত ও ঐতিহ্যবাহী এবং সমৃদ্ধ ভাষাগুলোর মধ্যে একটি। আরবীর চর্চায় জড়িত মানুষ নানা কারণে ভাগ্যবান। তারা একই সাথে জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণের জন্য কাজ করার সুযোগ পায়। অনেকে না জানার ফলে ধরণা করে যে, আরবি সাহিত্যকে ধর্মীয়ভাবে পড়াশোনা হয়। আরবী একাডেমির উদ্দেশ্য হোক আরবীর সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে বাংলাভাষী সাহিত্যমোদী মানুষের মাঝে তুলে ধরা।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ভাষার কবিতা আবৃত্তি করা হয়। আরবী কবিতা আবৃত্তি করেন অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, ইংরেজী কবিতা আবৃত্তি করেন ড. সাখাওয়াত হোসেন, উর্দু কবিতা আবৃত্তি করেন ড.সামিউল ইসলাম, আরবী কবিতা আবৃত্তি করেন সাখাওয়াত হোসেন, মাহাদী হাসান, শরিফুল ইসলাম, এবং জেসমিন খাতুনসহ আরো অনেকে। আরবি ও বাংলা গান পরিবেশন করেন, হাফিজুর রহমান বাবু, জাকিরুল ইসলাম, জামিলুর রহমান, আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরবী বিভাগের প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ কে সভাপতি করে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি এ্যারাবিক ক্লাব প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়। আরবী ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশ সাধনের লক্ষ্য নিয়ে এ ক্লাব প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।