চীনে সম্প্রতি শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর এবার একটি কয়লা খনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি খনিতে দুর্ঘটনার পর হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
চীনের সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
সম্প্রচারকারী সিসিটিভি জানিয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে হেইলংজিয়াং প্রদেশের জিক্সি শহরের উপকণ্ঠে একটি কয়লা খনিতে এ ঘটনা ঘটে।
সিসিটিভি বলেছে, খনির শ্যাফটের সঙ্গে যুক্ত এই দুর্ঘটনায় আহত ১৩ জনের সবাইকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ এখনও তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এএফপি বলছে, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে চীনের খনিগুলোতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়াদির উন্নতি হয়েছে। কিন্তু দুর্বল নিরাপত্তা রেকর্ডের কারণে দেশটির এই শিল্পে দুর্ঘটনা এখনও বেশ সাধারণ বিষয়।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ১৬৮টি দুর্ঘটনায় চীনে ২৪৫ জন মারা গেছেন। চলতি বছরের নভেম্বরে হেইলংজিয়াংয়ের আরেকটি কয়লা খনিতে দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়। এর আগে সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের গুইঝো প্রদেশে একটি কয়লা খনিতে আগুনে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়।
এর আগে গত আগস্টে চীনের উত্তরাঞ্চলীয় শানজি প্রদেশের একটি কয়লা খনিতে বিস্ফোরণে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছিলেন। সিসিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিস্ফোরণের সময় খনিতে প্রায় ৯০ জন শ্রমিক ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৯ জন ভেতরে আটকা পড়েন।
গত কয়েক দশকে চীনে খনি নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও বড় ধরনের দুর্ঘটনার খবরও দেশটির গণমাধ্যমে উঠে আসছে। আগে খনি দুর্ঘটনার অনেক খবরই দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হতো না।
তবে দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে দেশটির এমন সব খনিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চীনের স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলের একটি কয়লা খনিতে ধসে অন্তত ৫৭ জন নিখোঁজ হন। ইনার মঙ্গোলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় আলক্সা লীগ এলাকায় এই খনি দুর্ঘটনা ঘটে।
কিন্তু দেশটির কর্তৃপক্ষ কয়েক মাস ধরে ইনার মঙ্গোলিয়ায় খনি ধসের ঘটনায় চূড়ান্ত হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। গত জুনে এই দুর্ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছিলেন, খনি ধসে ৫৩ জন মারা গেছেন।
এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশের একটি সোনার খনিতে দুর্ঘটনা ঘটে। ওই সময় খনি ধসের ঘটনায় সেখানে কর্মরত অন্তত ৪০ জন চাপা পড়েন।