গত ৭২ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি স্থলবাহিনীর ২৫ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গোষ্ঠীটির সামরিক বিভাগ এজ্জেদিন আল কাসেম ব্রিগেড।
গতকাল বুধবার গাজায় হামাসের দু’টি সুড়ঙ্গ এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি বাড়িতে অভিযান চলানোর সময় এই সেনারা নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। আরও বলা হয়েছে, এদিন ইসরায়েলের প্রধান শহর তেল আবিবে রকেট হামলাও চালিয়েছে আল কাসেম ব্রিগেডের যোদ্ধারা।
ইসলায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এখন পর্যন্ত এ প্রসঙ্গে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন অন্তত ২০ হাজার ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।
সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজার ৫৮৬ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন।। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।
অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা।
এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন; এবং রয়েছেন শিশু, নারী, তরুণ-তরুণী এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধা— সব বয়সী মানুষ।
৭ দিনের অস্থায়ী বিরতির সময় নিজের কব্জায় আটক জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১১৮ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; বিপরীতে এই সময়সীমায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ১৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে।