আল্লাহ যখন কাউকে পছন্দ করেন, তখন তার অন্তর ইসলামের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। তার খোদাভীতি বেড়ে যায়। দীন পালন তার জন্য সহজ হয়ে যায়, গুনাহ কঠিন হয়ে যায়। নেক আমলে তার অন্তর প্রফুল্ল হয়, গুনাহ করতে অন্তর সায় দেয় না। কেউ ইমান ও নেক আমলের তওফিক লাভ করলে সে ভাবতে পারে আল্লাহ তাকে পছন্দ করেন বলেই তাকে ইমানদারদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন, নেক আমল করার তওফিক দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,
فَمَنۡ یُّرِدِ اللّٰهُ اَنۡ یَّهۡدِیَهٗ یَشۡرَحۡ صَدۡرَهٗ لِلۡاِسۡلَامِ وَ مَنۡ یُّرِدۡ اَنۡ یُّضِلَّهٗ یَجۡعَلۡ صَدۡرَهٗ ضَیِّقًا حَرَجًا کَاَنَّمَا یَصَّعَّدُ فِی السَّمَآءِ
যাকে আল্লাহ হিদায়াত করতে চান, ইসলামের জন্য তার বুক উন্মুক্ত করে দেন। আর যাকে ভ্রষ্ট করতে চান, তার বুক সঙ্কীর্ণ করে দেন, যেন সে আসমানে আরোহণ করছে। (সুরা আনআম: ১২৫)
আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,
وَ الَّذِیۡنَ اهۡتَدَوۡا زَادَهُمۡ هُدًی وَّ اٰتٰهُمۡ تَقۡوٰىهُمۡ
যারা সৎ পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেন এবং তাদেরকে মুত্তাকী হবার শক্তি দান করেন। (সুরা মুহাম্মাদ: ১৭)
রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন তাকেও দুনিয়ার সম্পদ দেন, যাকে ভালোবাসেন না তাকেও দেন। কিন্তু দীন আল্লাহ শুধু যাকে ভালোবাসেন তাকে দেন। (মুসনাদে আহমদ)
আল্লাহর ভালোবাসার আরেকটি লক্ষণ হলো তার সমাজের ও আশপাশের নেক মানুষজনও তাকে ভালোবাসে ও পছন্দ করে। আল্লাহ তার মধ্যে এমন গুণ দান করেন, এমন কাজ করার তওফিক দেন, যেসব গুণ ও কাজের কারণে মানুষ তাকে ভালোবাসে ও পছন্দ করে। নবিজি (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন তিনি জিবরাইলকে (আ.) ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, কাজেই তুমিও তাকে ভালোবাসো। তখন জিবরাইল (আ.) তাকে ভালোবাসেন। জিবরাইল (আ.) আকাশের অধিবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ ওই বান্দাকে ভালোবাসেন, তোমরাও তাকে ভালোবাসো। তখন আকাশের অধিবাসীরা তাকে ভালোবাসতে থাকে। পৃথিবীতেও তাকে সম্মানিত করার ব্যবস্থা করা হয়। (সহিহ বুখারি)
আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় সেই ব্যক্তি যে মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়তম আমল হলো, একজন মুসলমানের হৃদয় আনন্দে পরিপূর্ণ করা অথবা তার কোনো কষ্ট দূর করে দেওয়া। তার পক্ষ থেকে তার ঋণ আদায় করে দেওয়া অথবা তার ক্ষুধা দূর করে দেওয়া। (সহিহ মুসলিম)