বকেয়া টাকা ও কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে আগামী ১৮ তারিখ দিল্লি যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সেই ঘোষণাই করেছিলেন তিনি। রবিবার আলিপুরদুয়ারের সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে ফের একবার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মমতা। তিনি কেন্দ্র সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, হয় বকেয়া টাকা দিন, নয়তো গদি ছাড়ুন!
আলিপুরদুয়ারের মানুষদের এদিন একাধিক সরকারি পরিষেবা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। চা বাগানের শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার কাজও শুরু করেন। সেইসঙ্গে ঘোষণা করেন তাঁদের টাকাও দেওয়া হবে বাড়ি তৈরি করার জন্য। সেই অনুষ্ঠানের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী যেমন কেন্দ্র সরকারকে বকেয়া টাকা আটকে রাখা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তেমনই বিজেপিকেও নিশানা করেছেন।
এদিনের সভা থেকে মমতা বলেন, 'বিজেপি কথা দিয়ে কথা রাখে না। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি এখানে এসে সব বন্ধ চা বাগান খুলে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ভোট মিটে যাওয়ার পর কথা রাখেনি। আমরা যা কথা দিই তা রাখি।'
তিনি আরও বলেন, 'ফের আবার নাটক শুরু হবে। এদের বিশ্বাস করবেন না। কোভিডের সময় বিনামূল্যে কিছু রেশন দিয়েছিল। তারপর বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা বন্ধ করিনি। এটা আমাদের চলতে থাকবে। আমি চাই সকলে ভাল থাকুন।'
তারপরই কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমাদের ১০০ দিনের কাজের টাকা আমরা পাচ্ছি না। মানুষের জন্য বাড়ি আমরা যা তৈরি করেছি তার টাকাও দেয়নি। সব কর রাজ্য থেকে কেন্দ্র সরকার তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে সেই টাকা দিচ্ছে না। রাস্তা তৈরির টাকাও আটকে রেখেছে।'
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, '১৮, ১৯, ২০ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়েছি। আশা করি প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয় সময় দেবেন। আমার সঙ্গে বাংলার আরও কিছু সাংসদ যাবেন, তাঁরা বাংলার জন্য টাকা চাইবেন। ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা আমাদের পাওনা আছে কেন্দ্রের থেকে। এই টাকা পেলে আমরা বাংলার মানুষের জন্য আরও কত কাজ করতে পারতাম।'
পুজোর আগে বাংলার বকেয়া পাওনার দাবিতে দিল্লিতে প্রতিবাদ আন্দোলন করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেরকমই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, লোকসভা ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধারণা বাংলার গ্রাম গঞ্জের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছেন যে দিল্লি ইচ্ছা করে রাজ্যের টাকা আটকে রেখেছে। গরিব মানুষের ভোগান্তির জন্য ওরাই দায়ী।