অদূর ভবিষ্যতে নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা। তিনি বলেন, প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের জন্য সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। তাই পর্যায়ক্রমে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। নিউ ইয়র্কে ব্যাংকের শাখা খোলার বিষয়ে প্রবাসীদের দাবি সরকারকে অবহিত করবেন মর্মেও তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। নিউ ইয়র্কের বাংলা সংবাদকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় সময় বুধবার (৬ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় নিউ ইয়র্কের সংবাদকর্মী ছাড়াও কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেল হিসেবে তিনি তাঁর লক্ষ্য, কর্মপরিকল্পনা ও উদ্যোগসমূহের ব্যাপারে সবাইকে অবহিত করেন। তিনি কনস্যুলেটের সেবার মান উত্তোরোত্তর বৃদ্ধিতে কনস্যুলেট জেনারেলের আন্তরিকতা ও নিরলস কর্মপ্রচেষ্টার কথা ব্যক্ত করেন। এরপর তিনি বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতায়, সমাজ ও দেশ গঠনে প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকার বিষয়ে আলোচনা করেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে অভাবনীয় উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা বর্ণনা করে কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা এ ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহবান জানান। তিনি যোগ করেন, সকলের প্রচেষ্টায়, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে যা ২০২৬ সালে পূর্ণরূপে স্বীকৃতি পাবে। তিনি ২০০৮-০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ও উন্নয়নশীল অর্থনৈতিক সক্ষমতার কথা তুলে ধরেন। তিনি মিডিয়া ব্যক্তিত্বের এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এ বিষয়সমূহ জনগণের সামনে, বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার আহ্বান জানান। কনসাল জেনারেল অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকর্মীদেরকে তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য আয়নার সাথে তুলনা করে বলেন যে তারা ভুল-ভ্রান্তি ধরিয়ে দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের অশেষ কল্যাণ সাধন করেন।
স্বাগতিক দেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা, অর্থনৈতিক কূটনীতি, জনবান্ধব কূটনীতিকে কনসাল জেনারেল তাঁর নিউ ইয়র্ক মিশনের মূল লক্ষ্য হিসেবে অভিহিত করেন। বাংলাদেশের সাথে প্রবাসী বাংলাদেশীদের যোগসূত্র রক্ষায়, প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রচার ও প্রসারে কনস্যুলেট জেনারেলের নিরবিচ্ছন্ন প্রচেষ্টায় সকল প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডাকযোগে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের বিষয়, সার্বজনীন পেনশন স্কীমসহ বিভিন্ন বিষয় প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে তুলে ধরার জন্য অতিথিবৃন্দকে অনুরোধ করেন।
উপস্থিত সংবাদকর্মীগণ নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় একটি প্রশস্ত, যুগোপযোগী ভবনে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল স্থানান্তরের জোর দাবি জানান। তারা নিউ ইয়র্কে সোনালী ব্যাংক কিংবা বাংলাদেশের যে কোন রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ শাখা খোলা এবং নিউ ইয়র্কস্থ মিশনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের ব্যাপারেও কাজ করার জন্য কনসাল জেনারেলকে অনুরোধ করেন। উপস্থিত অতিথিবৃন্দের প্রশ্ন ও দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর জন্য নতুন প্রশস্ত যুগোপযোগী ভবন ক্রয়ের ক্ষেত্রে কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনঃব্যক্ত করেন। কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা প্রবাসে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের জন্য সরকার গৃহীত উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদানের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। নিউ ইয়র্কে ব্যাংকের শাখা খোলার বিষয়ে প্রবাসীদের দাবী সরকারকে অবহিত করবেন মর্মেও তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
উপস্থিত সংবাদকর্মীগণ প্রবাসী বাংলাদেশেীদের প্রতি কনস্যুলেট জেনারেলের চলমান সেবা ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন। মতবিনিময় সভা আয়োজনের জন্য তারা কনসাল জেনারেলকে ধন্যবাদ জানান।