মাধ্যমিকের নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবি


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 05-12-2023

মাধ্যমিকের নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবি

মাধ্যমিকের নতুন কারিকুলামকে শিক্ষার্থীদের মেধা, শিক্ষা ও নৈতিকতা ধ্বংসকারী শিক্ষা কারিকুলাম উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির এ দাবি জানান। 

বিবৃতিতে তিনি বলেন, নতুন কারিকুলামে ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষার নামে যা শেখানো হচ্ছে, তা স্পষ্ট যৌন শিক্ষা। এই যৌন শিক্ষা পাঠ সভ্য সমাজের পাঠ্য বই হতে পারে না।

তাই এ বই অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। বিশেষ করে ষষ্ঠ শ্রেণির এ শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইয়ের ৪৭ থেকে ৪৯ পৃষ্ঠায় বয়ঃসন্ধিকালে নারী-পুরুষের দেহের পরিবর্তন, নারী-পুরুষের শরীর থেকে কী নির্গত হয়, কোন অঙ্গের আকার কেমন হয়, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কেমন আকর্ষণ হয় ইত্যাদি শেখানো হচ্ছে। এ ছাড়া বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের ১১তম অধ্যায়ের ‘মানব শরীর’ শিরোনামে ১১৯ থেকে ১২২ পৃষ্ঠায়―পেনিস, পেনিস দৃঢ়তা, যোনী, লোম গজানো, স্তন, নিতম্ব, ঊরু, বগল, স্রাব, মাসিক, সেক্স হরমোন ইত্যাদি রগরগে বর্ণনাসহকারে কোমলমতি শিশুদের পড়ানো হচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগের বিষয়।

তিনি আরো বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির একটি সন্তানের বয়স কত হয়? ১১ থেকে ১৩ বছর হয়।

এই বয়সে সব শিশু বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছয় না। কিন্তু সেই বয়সেই এ ধরনের শিক্ষা সন্তানের মনে ভয়ংকর কু-প্রভাব ফেলতে পারে। সবচেয়ে জটিল বিষয় হচ্ছে, ক্লাসে পাঠ্য এ বিষয়গুলো নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রুপ ডিসকাশন করতে হয়, গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট করতে হয়, সামষ্টিক মূল্যায়নের মাধ্যমে ত্রিভুজ পেতে হয়। কিন্তু এ বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আলোচনার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যে লজ্জার বাঁধন থাকে, সেটা উঠে যায়।

বিশেষ করে এই শিক্ষা নিয়ে ক্লাসরুমে ছাত্র-ছাত্রীরা যখন গ্রুপ ডিসকাশন করবে, তখন তারা যে অনৈতিক কোনো কথা বা কাজ করে বসবে না তার নিশ্চয়তা কী? এ ছাড়া বাংলাদেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক দ্বারা ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এসব পড়ানোর নাম করে শিক্ষকরা যে শিক্ষার্থী থেকে কোনো অনৈতিক সুযোগ নিতে চাইবে না, তার নিশ্চয়তা অভিভাবকরা পাবে কোথায়?

শহিদুল ইসলাম কবির আরো বলেন, মানুষ মাত্রই বড় হবে, বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছবে এটাই যুগ-যুগান্তরে স্বাভাবিক নিয়ম। আজকে যারা মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি, খালা-মামা, তারাও একসময় এই বয়সে ছিলেন। তারা একসময় প্রয়োজনের সমাধানও পেয়েছেন। কিন্তু তারা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বয়ঃসন্ধির শিক্ষা নেননি, তাই বলে তাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে এমনটা নয়।

বরং আজকের যুগে অভিভাবকরা আরো ভয়ের মধ্যে থাকেন, না জানি তার সন্তান কী ভুল করে বসে। তার মধ্যে এই শিক্ষা অনেকটা নতুন প্রজন্মকে আরো উসকে দেওয়ার নামান্তর। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধীকালীন শিক্ষাটা নারী-পুরুষের জন্য পৃথক। সে জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের একজন অন্যজনেরটা জানার কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু পাঠ্য বই ও ক্লাসে একসঙ্গে ছেলে-মেয়েদের তা শেখানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় ও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী।

বিবৃতিতে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি বলেন, একটি শিশুর যখন দাঁত জন্মায়, তখন সে কামড় বসিয়ে তার ব্যবহার করতে চায়। একটি শিশু যখন হাঁটার শক্তি পায়, তখন বারবার হেঁটে তার ব্যবহার করতে চায়। ঠিক তেমনি একটি শিশু বয়ঃসন্ধিকালে যে নতুন ক্ষমতা পায়, তারও যথেচ্ছ ব্যবহার সে করতে চাইতে পারে। এ জন্য বয়ঃসন্ধিকাল একটি সেনসিটিভ সময়। এর নিয়ন্ত্রণও সেনসিটিভলি করা উচিত। বর্তমান পাঠ্য বইয়ে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে যে যৌন শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, তাতে শিশুটি ভুল বুঝে যৌনতায় বেপরোয়াও হয়ে যেতে পারে, যা খুব ভয়ংকর বিষয়।

তিনি বলেন, স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশে কোমলমতি শিশুদের মেধা, শিক্ষা ও নৈতিকতা ধ্বংসকারী শিক্ষা কারিকুলাম দেশের মানুষ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। বিতর্কিত এই শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করা জরুরি। অন্যথায় দেশের সাধারণ মানুষ কোমলমতি শিশুদের মেধা, শিক্ষা ও নৈতিকতা রক্ষায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। সূত্র: কালের কন্ঠ।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]