ভরা মৌসুমে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ঝুঁকিতে দেড়শ বিঘা বোরো খেত


অনলাইন ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 18-03-2022

ভরা মৌসুমে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ঝুঁকিতে দেড়শ বিঘা বোরো খেত

নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় পানির অভাবে প্রায় দেড়শ বিঘা বোরো খেত ঝুঁকির মুখে রয়েছে।  আর এমন অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধার বিদ্যুৎ ও বিতরণ বিভাগের (নেসকো-১) বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার কুপতোলা ইউনিয়নের বেড়াডাঙ্গা পূর্বপাড়ার সেচ পাম্প মালিক সাজু মিয়ার ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর নান্দিরভিটার রুহুল আমিনের সেচ পাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নেসকো কর্তৃপক্ষ। এতে ওইসব সেচপাম্পের আওতাধীন জমিতে পানি সরবরাহ করা না হলে, ফসল পুড়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে সদর উপজেলার কুপতোলা ইউনিয়নের বেড়াডাঙ্গা পূর্বপাড়ায় দেখা যায়, সাজু মিয়ার সেচ পাম্পের আওতায় প্রায় ত্রিশজন কৃষকের অন্তত অর্ধশত বিঘা ধান খেত পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। লাল বর্ণ ধারণ করেছে কিছু কিছু ধানখেত। 

একই চিত্র উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর নান্দিরভিটা গ্রামের রুহুল আমিনের সেচ পাম্পের আওতায় প্রায় ৪২ জন কৃষকের সত্তর বিঘা ধানি জমির। 

একাধিক কৃষক জানায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে নিজেরা না খেয়ে অনেক কষ্টে ধানচাষ করেছি। পানির অভাবে তা আজ মরতে বসেছে। এখন সার আর কিটনাশক দেওয়ার উপযুক্ত সময়। কিন্তু পানি না থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

কৃষকদের অভিযোগ, নেসকোর কর্মীদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করার অনুরোধ জানানো হলে তারা মামলার হুমকি দেয়। ফসল রক্ষায় শিগগিরই খেতগুলোতে পানি সরবরাহের দাবি জানান তারা।

সেচ পাম্প মালিক ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রুহুল আমিন বিদ্যুৎ বিভাগের সংযোগ হিসাব নম্বর-১২৮৭ বি এবং গ্রাহক নম্বর-৫০১৪৯০৪০ এর একজন বাণিজ্যিক গ্রাহক। তার বিরুদ্ধে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সালে ৬০ হাজার ১৩ টাকা বকেয়ার দায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বিদ্যুৎ আদালতে সি, আর ৫৬/১৪ মামলা করা হয়। পরের বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি সমুদয় টাকা পরিশোধ করে মামলা থেকে অব্যাহতি পান রুহুল আমিন। 

এদিকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ থেকে ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত সময় সেচ সংযোগ বন্ধ থাকে। কিন্তু কাগজে কলমে উক্ত সময়ে সংযোগটি চালু দেখিয়ে ৬৮ হাজার ৫৭৭ টাকার বিল প্রদান করা হয়। এরপর ২০১৭-২০১৮ মৌসুমে সেচ পাম্প বন্ধ থাকে। পরে ২০১৯-২০ সালে দুই মৌসুমে পাম্প চালু থাকায় ৩ মৌসুমে বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৮২০ টাকা। 

এর সঙ্গে ২০১৪ সালের হয়রানিমূলক ৬৮ হাজার ৫৭৭ টাকাসহ ৩ মৌসুমের মোট ৯৮ হাজার ১১২ টাকা বিল প্রদান করে নেসকো। পরে বিল বাকি রেখেই ২০২১ সালে সংযোগ চালু করার অনুমতি দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। এই সংযোগ চালু থাকাকালীন সময়ের হঠাৎ বিনা নোটিশে গত বৃহস্পতিবার আবারো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তারা।

একই ধরনের অভিযোগ করেন কুপতোলা ইউনিয়েনের সাজু মিয়া। তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের জিম্মি করে মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে সমুদয় টাকা পরিশোধের দাবি করে। শুধু এ বছরের সমুদয় বিল দিতে চাইলেও, তারা না নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ লাইনের মাঝমাঝি স্থান থেকে প্রায় ৩০০ গজ বিদ্যুতের তার নেসকোর লোকজন কেটে নিয়ে গেছে।

জানতে চাইলে গাইবান্ধা বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (নেসকো-১) নির্বাহী প্রকৌশলৗ মো. আসিফ বলেন, বকেয়া বিল পরিশোধ করেতে তাদের কয়েক দফা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার মুচলেকা দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার অনুমতিও দেওয়া হয়। কিন্তু তারা কোনোভাবেই বকেয়া বিল পরিশোধ করে না। বিল পরিশোধের পরেও হয়রানিমূলক বিল পরিশোধের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমার যোগদানের আগের হয়তো, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

রাজশাহীর সময় / এম আর


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]