ইজ়রায়েলে লস্কর নিষিদ্ধ, হামাস নিয়ে পাল্টা চাপ’ মিলল ভারতের। এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার প্রধান চক্রী লস্কর ই তইবাকে নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকাভুক্ত করল ইজ়রায়েল। এই সিদ্ধান্তের কথা মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছে দিল্লির ইজ়রায়েলি দূতাবাস।
ওই পোস্টে বলা হয়েছে, আগামী ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার ১৫ বছর। তেল আভিভ লস্করকে একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে মনে করে। সেই সঙ্গে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইজ়রায়েল দূতাবাসের বক্তব্য, ‘যদিও ভারত আমাদের কাছে এই বিষয়ে কোনও অনুরোধ করেনি, কিন্তু ইজ়রায়েলের পক্ষ থেকে লস্কর ই তইবাকে বেআইনি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ।’ লস্কর সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে ইজ়রায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘যারা আমাদের বিরুদ্ধে নাশকতা চালায় অথবা আমাদের সীমান্তে সক্রিয়, সেই সব জঙ্গি সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করি আমরা। যারা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের তালিকাভুক্ত, তাদেরও আমরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করি। পাশাপাশি ভারতের অথবা আমেরিকার নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে, এমন সংগঠনও আমাদের তালিকায় স্থান পায়। গত কয়েক মাস ধরেই ইজ়রায়েলের বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তা ও মন্ত্রী এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করার গুরুত্বকে আমরা তুলে ধরতে চাই।’
এরপরই মুম্বই হামলার প্রসঙ্গ তুলে ইজ়রায়েল দূতাবাসের বক্তব্য, ‘এই সংগঠনটি মারাত্মক একটি জঙ্গি সংগঠন। শয়ে শয়ে ভারতীয় এবং অন্যান্যদের হত্যার পিছনে রয়েছে এরা। ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর এই সংগঠনের জঘন্য হামলা সমস্ত শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র এবং সমাজকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল।’
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ইজ়রায়েলের কাছ থেকে ‘এই উপহার’ হামাসকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত করার জন্য ভারতের উপরে চাপও তৈরি করল। এখনও পর্যন্ত ৪৪টি সংগঠনকে ভারত নিষিদ্ধ তালিকায় রাখলেও, হামাস তার মধ্যে নেই। পশ্চিম এশিয়ার রণনীতির ক্ষেত্রে ভারত বরাবরই যে ভারসাম্য রেখে এসেছে, সেই অবস্থান থেকেই হামাসকে তারা ওই তালিকাভুক্ত করতে চায় না আজও। কাতার বা ইরানের মতো দেশ পুরোপুরিভাবে হামাসের পাশে রয়েছে এটাও হিসাবের মধ্যে রাখতে হচ্ছে মোদী সরকারকে।
সম্প্রতি ইজ়রায়েলের উপর হামাসের আক্রমণের পর কঠোর ভাষায় প্রধানমন্ত্রী নিন্দা করেছেন হামাসের। ভারত মূলত ইজ়রায়েলপন্থী নীতি নিয়েই চলছে। কিন্তু ইজ়রায়েলের (আমেরিকারও) পরোক্ষ চাপের মোকাবিলা করে সাউথ ব্লক এবার এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।