মধ্য কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় ডেকে পাঠিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা অভিযোগ তাঁর পরিবারের। এই ঘটনার জেরে বুধবার সন্ধ্যা থেকে অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে কলেজ স্ট্রিট। পরিবারের দাবি, চুরির মোবাইল কেনার অভিযোগে যুবককে ডেকে পাঠানো হয় থানায়। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন মারধরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছে পরিবার। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল ঘোষ। তিনি ঘটনার খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছেও যান।
অশোক সাউ নামের ওই ব্যবসায়ী যুবক একটি পানের দোকান চালাতেন। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, থানা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করার পর আপাতত রাখা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজে।
অশোকের ভাইপো বিজয় সাউয়ের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে হঠাৎই আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা থেকে যোগাযোগ করা হয় তাঁর কাকার সঙ্গে। তাঁকে এসে দেখা করতে বলা হয় থানায়। তলব পেয়ে তিনি থানায় যান। কিন্তু বিকেলে হঠাৎই অশোকের পরিবার জানতে পারে থানায় অশোকের মৃত্যু হয়েছে।
বিজয় জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে থানায় গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী রজনী সাউ। তিনিই তাঁর কাকাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন থানায়। শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়ে এর পর রজনী ফেসবুক লাইভ করে ঘটনাটির বিবরণ দেন। অভিযোগ করেন, থানায় ডেকে এনে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে তাঁর আত্মীয়কে।
এরপরই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে কলেজস্ট্রিট চত্বর অবরোধ করেন মৃত ব্যবসায়ীর আত্মীয় স্বজনেরা। সূত্রের খবর, পানের দোকানের মালিক অশোককে চুরি যাওয়া মোবাইল বেআইনি ভাবে কেনার অভিযোগে তলব করা হয়েছিল থানায়। সেখানে তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যদিও কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল তা এখনও স্পষ্ট নয়। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ এ ব্যাপারে কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি।
অন্য দিকে, এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। আমহার্স্ট থানার ঘটনাকে ‘নারকীয়’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছ থেকে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। কিছু ভিডিয়োও আমাদের হাতে এসেছে। আমাদের দাবি, ওই ব্যক্তির পোস্ট মর্টেম কোনও ভাবেই কলকাতা পুলিশ বা রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোও হাসপাতাল বা মর্গে করানো যাবে না। এক মাত্র কমান্ড হাসপাতালে ওই ব্যক্তির ময়নাতদন্ত করাতে হবে।’’ সজল বুধবার রাতেই পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে। পরে তিনি জানান, শীঘ্রই বিজেপি নেতৃত্বও ঘটনাস্থলে পৌঁছবেন। সজল বলেন, আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় ঠিক কী হয়েছিল তা জানতে সিবিআই তদন্ত হওয়া দরকার।