ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজার উত্তরে অবস্থিত বৃহত্তম হাসপাতাল আল শিফা বর্তমানে প্রায় কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমনকি হাসপাতালটিতে থাকা শত শত মৃতদেহ দাফন করতে পারছে না বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার এ তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যম বিবিসি।প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় টানা ৩৮ দিন ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনের বর্তমান টার্গেট হল হাসপাতালগুলো।
আর তাই এসব হাসপাতাল লক্ষ্য করেই হামলা আরও জোরদার করেছে দখলদার বাহিনী। এতে করে বন্ধ হয়ে গেছে গাজার সবচেয়ে বড় দুটি হাসপাতাল।বিশেষ করে গাজার উত্তরে অবস্থিত আল শিফা হাসপাতালে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র হামলা ও অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। দেশটির দাবি হাসপাতালের নিচে অবস্থিত একটি টানেলে হামাস কমান্ড-এন্ড-কন্ট্রোল সেন্টার পরিচালনা করছে। তবে হামাস এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উভয়ই এ দাবি অস্বীকার করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেয়ার বলেছেন, প্রায় ৬০০ জন হাসপাতালে রয়ে গেছে এবং অন্যরা হলওয়েতে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের চারপাশে এমন অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে যেগুলোর কাছে যাওয়া যাচ্ছে না, এমনকি দাফনও করা যাচ্ছে না বা সেগুলো উদ্ধার করে কোনো মর্গেও নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। যেভাবে কাজ করা উচিত হাসপাতালটি এখন আর সেভাবে কাজ করছে না। এটি এখন প্রায় একটি কবরস্থান। এদিকে হাসপাতালে মৃতদেহ জমে ও পচে যাওয়ার কথা বলেছেন চিকিত্সকরাও।
ডাঃ মোহাম্মদ আবু সেলমিয়া বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, হাসপাতালের চারপাশে পরে থাকা পচনশীল মৃতদেহগুলিকে দাফন করতে হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ, এর ফলে কুকুররা এখন হাসপাতালের মাঠে ঢুকে মৃতদেহ খেতে শুরু করেছে।অন্যদিকে আল-শিফা হাসপাতালে জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইনকিউবেটর অচল হয়ে ঝুঁকির মুখে পড়েছে কয়েক ডজন শিশুর জীবন। ফলে ইনকিউবেটর থেকে বের করে বিছানায় গাদাগাদি করে রাখতে হচ্ছে শিশুদের।
সেলমিয়া জানান, অক্সিজেনের অভাবে ইতিমধ্যে সাতটি শিশু মারা গেছে।অবশ্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সিনিয়র উপদেষ্টা মার্ক রেগেভ দাবি করেছেন, ইসরায়েল ওই শিশুদের সরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব দিলেও হামাস সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।