আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ইউক্রেনকে ১০ লাখ কামানের গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার কথা বলেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে তারা তাদের সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারছে না বলে জানিয়েছে।
মঙ্গলবার এ বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস। ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের পিস্টোরিয়াস বলেন, আমি ১০ লাখ রাউন্ডের প্রতিশ্রুতি দেইনি এবং এর নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছিল। জিজ্ঞেস করা উচিত, ১০ লাখ সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা কি আসলেই বাস্তবসম্মত ছিল। ইইউ’র প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এক বৈঠকে ১২ মাস সময়ের মধ্যে এসব গোলা-ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
এই প্রথম কোনও ইউরোপীয় মন্ত্রী প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন ইউক্রেনকে দেয়া গোলাবারুদ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। যদিও কূটনীতিক ও কর্মকর্তারা একান্ত আলাপে দীর্ঘদিন ধরে এই লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসছেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনের জরুরি গোলাবারুদের মজুত নিশ্চিত করতে ইইউ এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ইউক্রেন জরুরিভিত্তিতে ১৫৫ মিলিমিটার গোলা চেয়েছিল।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ১০ লাখ বলা সহজ, ব্যয় করার মতো অর্থও আছে। কিন্তু উৎপাদন তো করতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত এখন তা-ই ঘটছে। ১০ লাখ রাউন্ড পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত কয়েকজন কর্মকর্তার মতে, ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর এত বিপুল সংখ্যক গোলা মার্চের আগে উৎপাদনের সক্ষমতা নেই। তবে কেউ কেউ বলছে, কোম্পানিগুলোর কাছে বিভিন্ন দেশের ক্রয় আদেশ ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ ভালো উদ্যোগ ছিল।
অপর ইইউ প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিস্টোরিয়াসের মতো সরাসরি বলেননি, তবে তার সঙ্গে ভিন্নমতও করেননি। পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, এ প্রকল্পের আওতায় প্রথম কিস্তিতে ইউক্রেনকে ৩ লাখ কামানের গোলা সরবরাহ করেছে। ইইউ সদস্য দেশগুলো নিজেদের মজুত থেকে এগুলো দিয়েছে। তিনি বলেছেন, এখন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ইইউ দেশগুলো যৌথ ক্রয় উদ্যোগে কামানের গোলা সংগ্রহ করবে।
ইইউর ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা সংস্থা সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বলেছিল, সাতটি ইইউ দেশ এই প্রকল্পের অধীনে গোলাবারুদ অর্ডার করেছে। গোপনীয়তার কথা জানিয়ে পরিমাণ প্রকাশ করেনি সংস্থাটি। সূত্র: রয়টার্স।