সম্মানী দ্বিগুণ হচ্ছে নির্বাচনী কর্তাদের


, আপডেট করা হয়েছে : 14-11-2023

সম্মানী দ্বিগুণ হচ্ছে নির্বাচনী কর্তাদের

নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের এক দিনের সম্মানী দ্বিগুণ করা হচ্ছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের সম্মানী বাড়ছে। সাধারণত জাতীয় নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা তিন হাজার টাকা করে সম্মানী পান। এ ছাড়া যাতায়াত বাবদ প্রত্যেকে অতিরিক্ত আরো এক হাজার টাকা করে পাবেন। শুধু নির্বাচন পরিচালনায় নয়, আইনশৃঙ্খলা খাতের ব্যয়ও বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছে। নির্বাচনে ব্যয় ধরা হচ্ছে দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে। অন্য দিকে, সংসদ নির্বাচনের মালামালসহ অন্যান্য উপকরণ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারিতে রাখার জন্য ইসির পক্ষ থেকে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচন পরিচালনার সাথে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিভিন্ন খাতে ব্যয় বাড়বে। প্রায় ৯ লাখ প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের ভাতাবাবদ গত নির্বাচনের চেয়ে এবার দ্বিগুণ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। শুধু ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের ভাতা বাবদ ব্যয় বাড়ছে ২৮০ কোটি টাকা। এগুলোসহ নির্বাচন পরিচালনা খাতে সম্ভাব্য ব্যয় দাঁড়াচ্ছে এক হাজার কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রশিক্ষণ খাতে ব্যয় হচ্ছে আরো ১৩৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যয় ধরা হচ্ছে দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি। যদিও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচন পরিচালনা- এই দুই খাত মিলিয়ে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।

ইসি সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলায় ব্যয় হবে এক হাজার ৭১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। নির্বাচনে পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্য মোতায়েন ও তাদের যাতায়াতের পেছনে ওই টাকা ব্যয় হবে বলে বাহিনীগুলো থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৪৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা চেয়েছে পুলিশ। আর আনসার চেয়েছে ৩৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ ৩৯টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। সব দল অংশ নেয়ায় ওই নির্বাচনে সহিংসতাও কম ছিল। এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৪০ হাজার ১৯৯টি ভোটকেন্দ্র ও দুই লাখ সাত হাজার ৩১৯টি ভোট কক্ষ ছিল। তখন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ছিলেন ছয় লাখ ৬২ হাজার ১১৯ জন। আর ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল ছয় লাখ আট হাজার। এবার ভোটার বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্র ও দুই লাখ ৬০ হাজার ভোটকক্ষ হিসাবে ধরে সব পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসি। এবার ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা প্রয়োজন হবে প্রায় ৯ লাখ।

জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশ ৪৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা চেয়েছে, একাদশ নির্বাচনে চাহিদা ছিল ৪২৪ কোটি টাকা। চাহিদা কাটছাঁট করে বরাদ্দ দেয়া হয় ১২৯ কোটি ৫৭ লাখ কোটি টাকা। এবার আনসার ও ভিডিপি চেয়েছে ৩৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা। গত নির্বাচনে এ বাহিনীকে দেয়া হয় ২৪২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এবার বিজিবি চেয়েছে ১৪৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। গত নির্বাচনে বিজিবি পেয়েছিল ৭৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে র‌্যাব চেয়েছে ৫০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা; যা গত নির্বাচনে ছিল ২২ কোটি ১২ লাখ টাকা। এবার কোস্টগার্ড চেয়েছে ৭৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। যা গত নির্বাচনে ছিল ২৫ কোটি টাকা।

ডিসির ট্রেজারিতে নির্বাচনী মালামাল : ইসির ক্রয় ও মুদ্রণ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ এনাম উদ্দীন নির্দেশনাটি গতকাল পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্রসহ প্রাথমিক নির্বাচনী সামগ্রী যেমন- মনোনয়নপত্র, মনোনয়ন ফরম পূরণের নির্দেশিকা, আচরণ বিধিমালা, জামানত বই, রসিদ বই, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন ইত্যাদি। আর নির্বাচনী দ্রব্যাদি যেমন- অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, ব্রাস সিল, লাল গালা, হেসিয়ান ব্যাগ (বড়), হেসিয়ান ব্যাগ (ছোট) এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের সিল (লক) গত ৩ ও ৪ নভেম্বর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সরবরাহ করা হয়েছে।
নির্বাচনী দ্রব্যাদি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ট্রেজারি শাখায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার সাথে সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসকে নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
এ ছাড়া একাদশসহ অন্যান্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র, ম্যানুয়েল ও অন্যান্য অব্যবহৃত ফরম যদি মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকলে সেগুলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার না করে অকার্যকর করে আলাদাভাবে রাখার জন্য তার আওতাধীন অফিসকে নির্দেশও দিয়েছে সংস্থাটি।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]