রাশিয়ার সঙ্গে চতুর্থ দফায় সোমবার (১৪ মার্চ) শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে এবং মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) তুরস্কে তা চলবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে এই শান্তি আলোচনার মধ্যেই ইউক্রেনে এসে রাশিয়ার সেনারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে এবং প্রতিরোধের মুখে বিভিন্ন এলাকায় তারা অস্ত্র ফেলেও পালিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
বিবিসি জানায়, ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেছেন যে কিয়েভের প্রতিনিধিরা তাকে আলোচনা ‘বেশ ভালো’ চলছে বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনীয় বাহিনী সোমবার (১৪ মার্চ) লুহানস্ক এবং কিয়েভ অঞ্চল থেকে প্রায় চার হাজার বাসিন্দাকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সহায়তা করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে ১০০ টন সহায়তাসামগ্রী নিয়ে অবরুদ্ধ বন্দর শহর মারিউপোলের উদ্দেশে যাওয়া একটি গাড়িবহর এখনও বার্দিয়ানস্কে আটকে আছে বলে ভিডিও বার্তায় জানান ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
এদিকে ইউক্রেনে এসে রুশ সেনারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে দাবি করে জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের কাছ থেকে এমন প্রতিরোধ আশা করেনি মস্কো। তার দাবি, বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের সরঞ্জাম (অস্ত্র, গোলাবারুদ) ফেলে পালিয়েছে রাশিয়ান সেনারা।
এদিকে সমঝোতায় আসতে সোমবার (১৪ মার্চ) চতুর্থ দফায় বৈঠকে বসেন ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা। তবে গতকালের বৈঠকও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়া শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা এবং আলোচক মাইখাইলো পোডোলিয়াক জানিয়েছেন, ‘কৌশলগত বিরতির’ পর মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) পুনরায় আলোচনা শুরু হবে।
ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকের একটি ছবি প্রকাশ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যোগাযোগ কঠিন হলেও তা চলমান। উভয়পক্ষ সক্রিয়ভাবে তাদের নিজস্ব অবস্থান প্রকাশ করেছে। তবে ভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থাই আমাদের মতবিরোধের মূল কারণ।’
নাম প্রকাশ না করে আরেক শীর্ষ আলোচক জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, ইউক্রেন অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, রুশ সেনা প্রত্যাহার এবং রাশিয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায়। এটি হলেই কেবল আঞ্চলিক সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক পার্থক্য নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হতে পারে।
এদিকে দুপক্ষের আলোচনার মধ্যেও ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় হামলা-সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। হামলার ১৯তম দিনে সোমবার (১৪ মার্চ) রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে কিয়েভের উত্তরাঞ্চলীয় ওবোলন জেলার একটি নয়তলা আবাসিক ভবনে গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। দুপক্ষের আলোচনার মধ্যেই চালানো এই হামলায় দুজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের রাজধানীও আর্টিলারি হামলার মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ শহর হয়ে উঠতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইউক্রেনের জরুরি মন্ত্রণালয়ের পোস্ট করা এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার শিকার হওয়া ভবনটি আগুনে পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য। এ সময় রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্থানীয়দের স্লোগান দিতেও দেখা গেছে। ভবনটি উত্তর শহরতলির কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত যেখানে সরকারি বাহিনীর সেনারা গত কয়েক দিন ধরে রাশিয়ান বাহিনীকে প্রতিরোধের চেষ্টা করে আসছে।
রাজশাহীর সময় / জি আর