সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি সজীব ও যুগ্মসম্পাদক মাহফুজার রহমান গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে সজীব সাহা ও মাহফুজার রহমান আহত হন।
জানা যায়, ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সজীব সাহাকে সভাপতি ও আল মহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটির সহসভাপতি করা হয় তৌহিদুর রহমান।
আর যুগ্মসাধারণ সম্পাদক করা হয় মাহফুজার রহমানকে। তাবে তৌহিদ ও মাহফুজার কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে আলাদা একটি বলয় সৃষ্টি করেন। এরপর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এর জেরে তাদের মধ্যে কয়েকবার পালটাপালটি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বৃস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সজীব সাহা ও মাহিদুল ইসলাম জয়ের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পসে জড়ো হয়ে বিএনপি ও জামায়াতের হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন। এরপর কলেজের বটতলায় সমাবেশ করছিলেন।
খবর পেয়ে তৌহিদুর রহমান ও মাহফুজারের নেতৃত্বে তাদের বিপুলসংখ্যক সমর্থক ক্যাম্পাসে আসেন। তারা ধারালো অস্ত্র, হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা নিয়ে সমাবেশে হামলা চালান। এতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব সাহা, সৈকত, শিহাব, রাহাত ও লিটন আহত হন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়ার একপর্যায়ে সজীব গ্রুপ ক্যাম্পাস থেকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর সজীব সাহার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে ফিরে এসে তৌহিদুর রহমান ও মাহফুজারের গ্রুপের ওপর পালটা হামলা চালায়।
এতে তৌহিদুর রহমান, মাহফুজার রহমানসহ ৪/৫ জন আহত হন। পরে সদর থানা পুলিশ এসে দুপক্ষকে ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে দেয়। এ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা বলেন, বিএনপি-জামাতের অনুসারীদের নিয়ে আমাদের সমাবেশ হামলা চালানো হয়। এতে আমিসহ ৪/৫ জন আহত হয়েছি।
আর মাহফুজার রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে আমরা কলেজ ক্যাম্পাসে যাই। এ সময় সজীব সাহার নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা হয়। এতে তৌহিদুর, আমিসহ ৪/৫ জন আহত হয়েছি। জানতে চাইলে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সবুর উদ্দিন বলেন, সকালে একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক চলছিল। এ সময় ক্যাম্পাসে হট্টগোল শোনা যায়।
পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বগুড়া সদর থানার ইনস্পেকটর (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, সজীব সাহার নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতারা ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের অপরপক্ষ সমাবেশে হামলা চালায়। শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়া। পরে দুপক্ষকে তাড়িয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।