হাদিস থেকে শিক্ষা: শিরক থেকে বেঁচে থাকুন


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 05-11-2023

হাদিস থেকে শিক্ষা: শিরক থেকে বেঁচে থাকুন

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমি নবিজিকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহর কাছে কোন পাপ সবচেয়ে বড়? তিনি বললেন, তুমি কোনো কিছুকে আল্লাহর সমকক্ষ বানাবে অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, নিশ্চই এটা অত্যন্ত গুরুতর পাপ। তারপর কোনটি? তিনি বললেন, তোমার সঙ্গে খাবার খাবে এ ভয়ে সন্তানকে হত্যা করা। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, প্রতিবেশির স্ত্রীর সাথে ব্যাভিচার করা। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

এ হাদিস থেকে যে শিক্ষা আমরা পাই

১. আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করতে নিষেধ করে আল্লাহ বলেছেন,

فَلَا تَجۡعَلُوۡا لِلّٰهِ اَنۡدَادًا وَّ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না। (সুরা বাকারা: ২২)

আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে দোয়া করা, সাহায্য চাওয়া, আল্লাহ ছাড়া কারো জন্য জবাই করা, কারো জন্য মানত করা, কোনো দরবেশ বা বুজুর্গের কবরে মানত করা, সিজদা করা ইত্যাদি বড় শিরক। এসব শিরকে জড়িত হলে মানুষ মুরতাদ ও বেইমান হয়ে যায়।

২. শিরক সবচেয়ে বড় ও গুরুতর পাপ। এটা একমাত্র গুনাহ যা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না বলে ঘোষণা করেছেন। তাই বড়-ছোট সব ধরনের শিরক থেকে বেঁচে থাকা অত্যাবশ্যক। শিরকের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে এমন কাজগুলো থেকেও দূরে থাকা থাকা উচিত। যেমন কবর বাঁধাই করা, সমাধিস্তম্ভ বানানো, কবরের ওপর মসজিদ নির্মাণ করা ইত্যাদি। আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নবি ও খলিল হজরত ইবরাহিমের (আ.) মতো ব্যক্তিও নিজের ও বংশধরদের শিরকে জড়িত হয়ে পড়ার ভয় করতেন। তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন,

وَّ اجۡنُبۡنِیۡ وَ بَنِیَّ اَنۡ نَّعۡبُدَ الۡاَصۡنَامَ

আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন। (সুরা ইবরাহিম: ৩৫)

৩. যারা শিরকের ব্যাপারে যথাযথভাবে জানে না, শিরকে জড়িত হওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাকে না, তারা অনেক সময় না বুঝে শিরকে জড়িয়ে পড়ে। শয়তান বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে মানুষকে এই গুরুতর পাপে জড়িয়ে আল্লাহর দীন থেকে বের করে দিতে। আল্লাহ বলেন,

کَمَثَلِ الشَّیۡطٰنِ اِذۡ قَالَ لِلۡاِنۡسَانِ اکۡفُرۡ فَلَمَّا کَفَرَ قَالَ اِنِّیۡ بَرِیۡٓءٌ مِّنۡکَ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اللّٰهَ رَبَّ الۡعٰلَمِیۡنَ

যেমন শয়তান মানুষকে বলেছিল, ‘কুফরি কর’, তারপর যখন সে কুফরি করল তখন সে বলল, আমি তোমার থেকে মুক্ত; নিশ্চয় আমি সকল সৃষ্টির রব আল্লাহকে ভয় করি। (সুরা হাশর: ১৬)

শয়তান বিভিন্ন কৌশলে মানুষকে শিরকের কাছাকাছি নিয়ে যায়। যেমন আল্লাহর ওলিদের প্রতি ভালোবাসা, তাদেরকে আল্লাহর নৈকট্যলাভের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা ইত্যাদি। আল্লাহ বলেন,

اَلَا لِلّٰهِ الدِّیۡنُ الۡخَالِصُ وَ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِهٖۤ اَوۡلِیَآءَ ۘ مَا نَعۡبُدُهُمۡ اِلَّا لِیُقَرِّبُوۡنَاۤ اِلَی اللّٰهِ زُلۡفٰی ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَحۡکُمُ بَیۡنَهُمۡ فِیۡ مَا هُمۡ فِیۡهِ یَخۡتَلِفُوۡنَ ۬ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یَهۡدِیۡ مَنۡ هُوَ کٰذِبٌ کَفَّارٌ

জেনে রেখ, আল্লাহর জন্যই বিশুদ্ধ ইবাদত-আনুগত্য। যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদের অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা শুধু এজন্যই তাদের ‘ইবাদাত করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেবে।’ যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছে আল্লাহ নিশ্চয় সে ব্যাপারে তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন। যে মিথ্যাবাদী কাফের, নিশ্চয় আল্লাহ তাকে হেদায়াত দেন না। (সুরা জুমার: ৩)

সূত্র: আল-ফাওয়ায়িদুস-সুলাসিয়্যাহ মিনাল-আহাদিসিন-নববিয়্যাহ


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]