দেশের যোগাযোগ খাতে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ সরকার যে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে তা সর্বমহলে স্বীকৃত ও প্রশংসিত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে উন্নত, দক্ষ ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা। গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার খাত হিসাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ, সুগম ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে সড়ক ও রেলপথের সম্প্রসারণ এবং সংস্কার চলমান রয়েছে। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো রাজনৈতিক দল সড়ক, রেল, বিমান ও নৌপথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা এবং কর্মসূচি (রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১) সামনে রেখে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে।
বুধবার জাতীয় সংসদে নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। মো. হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে আমি ১৫তম ব্রিকস সামিটে যোগদান করি এবং গত ২৪ আগস্ট ‘ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড দ্য ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ’ এ বক্তব্য প্রদানকালে ব্রিকসকে বহুমুখী বিশ্বের বাতিঘর হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, প্রথমত আমাদের অবশ্যই চলমান খাদ্য, জ্বালানি এবং নারী ও কন্যাশিশুদের পুষ্টি, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার আর্থিক সংকটের কারণে উদ্ভূত বিরূপ প্রভাব প্রশমিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের মেয়েদের স্কুলে ধরে রাখার জন্য, তাদের সাইবার অপরাধ থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এবং ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিভাজন কমানোর জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তৃতীয়ত, নারীদের লাভজনক কর্মসংস্থান, শালীন কাজের সুযোগ, মজুরির সমতা এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সুযোগ বাড়াতে হবে।
চতুর্থত, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু প্রভাবের কারণে সুরক্ষা এবং সহনশীলতা নিশ্চিত করতে নারীদের প্রয়োজনীয়তার দিকে আমাদের গভীরভাবে নজর দিতে হবে। পঞ্চমত, আমাদের অবশ্যই নারীদের জন্য টেকসই ও সক্রিয় রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গঠনের একটি সুষম প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র গড়ার প্রচারণা চালাতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশ ব্রিকসের অর্থনৈতিক বাতায়ন নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সদস্যপদ লাভ করে। তিনি বলেন, ব্রিকস সম্মেলন চলাকালে ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিটে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি যোগ দিই। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার বক্তব্যে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরি। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে এ দেশে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে, সেসব চিত্র তুলে ধরে তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানাই।
সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ নভেম্বর সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন। তিনি সেখানে আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে যোগ দেবেন। একই সঙ্গে ওমরাহ পালন করবেন। বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৫ নভেম্বর প্রথমে মদিনায় যাবেন। সেখান থেকে যাবেন জেদ্দায়। জেদ্দায় নারী সম্মেলনে যোগ দেবেন। পরে মক্কায় যাবেন। সৌদি আরব সফর শেষে ৭ নভেম্বর দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী।
মোমেন বলেন, সৌদি আরব সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর ওআইসি মহাসচিব, ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, সৌদির সম্মেলনে গাজা প্রসঙ্গ উঠবে বলে আমরা আশা করি।