বিশেষ নিরাপত্তায় দূরপাল্লার বাস চলাচলের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। রাজধানীতে কাঁচা সবজিসহ নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলও নিশ্চিত করা হবে। এ জন্য পরিবহন মালিক ও পুলিশ বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি ও সংসদ সদস্য শাজাহান খান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ও সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।
বৈঠক শেষে শাজাহান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০১৫ সালে যেভাবে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ মোকাবেলা করা হয়েছে, এবারও ঠিক সেভাবে কিছু কৌশল নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রপ্তানিপণ্যসহ সব পণ্যবাহী গাড়ি ও দূরপাল্লার বাসগুলো চলাচল করবে একসঙ্গে। এসব গাড়ির সামনে-পেছনে পুলিশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা কালের কণ্ঠকে বলেন, বৈঠকে পরিবহনব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। অবরোধে যদি রাস্তায় কোনো গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয় তাহলে প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়ও আলোচনা হয়েছে। গাড়ির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বলবেন।
মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বিএনপির মাঠে কোনো লোক নেই।
বিচ্ছিন্ন দুই-এক জায়গায় তারা গাড়ি পোড়াচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তাই অবরোধে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন সহজ করতে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, পরিবহন মালিকরা আর কত দিন বসে থাকবেন। তাঁদের ব্যাংকের ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে।
অবরোধে শ্রমিক বেকার, মালিক বেকার—এসব বিষয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, অবরোধে পরিবহন মালিকরা গাড়ি চালাতে চান। এ জন্য তাঁরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা চেয়েছেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন। অবরোধ চলাকালে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, রেলের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী, রেলওয়ে পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য জানান, টানা তিন দিনের অবরোধে দেড় থেকে দ্বিগুণ বেড়েছে পরিবহন খরচ, যা সরাসরি প্রভাব ফেলেছে পণ্যের দামে। এ জন্য যেকোনো মূল্যে পণ্যবাহী গাড়ি স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সবজির আড়তগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
তিন দিনের অবরোধে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। অবরোধ আরো বাড়লে মানুষের জীবনযাত্রা সংকটে পড়বে।