পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি, উত্তেজনা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 27-10-2023

পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি, উত্তেজনা

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাতের মধ্যেই পাকিস্তান ও ভারত সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাতভর সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। এতে ভারতীয় অংশে বিএসএফ সদস্যসহ কয়েকজনের আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন ভারতের পাকিস্তান-সীমান্তবর্তী এলাকার বহু বাসিন্দা। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) পৃথক দুই প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

দ্য ডন বলছে, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের পাঞ্জাবের শিয়ালকোটের কাছে ওয়ার্কিং বাউন্ডারি বরাবর পাকিস্তানি পোস্টগুলোতে গুলিবর্ষণ করেছে বলে বৃহস্পতিবার দেশটির সামরিক সূত্র জানিয়েছে। মূলত ওয়ার্কিং বাউন্ডারি হচ্ছে সীমান্তের সেই রেখা যার একদিকে থাকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভূমি অন্যদিকে বিরোধপূর্ণ এলাকা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) বা স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা বিভিন্ন প্রতিবেদনে জাফরওয়াল সেক্টরে ভারতের সাথে সীমান্তের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভারী গোলাগুলি এবং কামানের গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের ওই সামরিক সূত্রের মতে, বৃহস্পতিবার রাতে ভারতীয় একটি ড্রোন পাকিস্তানি ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার পর গোলাগুলি শুরু হয়। যদিও পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করে ওই ড্রোনটি ভূপাতিত করে। কিন্তু ভারতীয় বাহিনী দৃশ্যত অনুপ্রবেশের ওই ব্যর্থ প্রচেষ্টা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওয়ার্কিং বাউন্ডারি বরাবর পাকিস্তানি পোস্টে নির্বিচারে গুলি চালায়।

সূত্র জানায়, পাকিস্তানি বাহিনী ভারতীয় আগ্রাসনের ‘উপযুক্ত জবাব’ দিয়েছে।

এদিকে ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরে ভারতীয় পোস্ট ও আবাসিক এলাকায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী গুলি চালাচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, জম্মু ও কাশ্মির সীমান্তে আর্নিয়া সেক্টরে বিনা উস্কানিতে গুলি ও মর্টার ছোড়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) একজন সদস্য আহত হয়েছেন।

এছাড়া আবাসিক এলাকায় মর্টার শেল আঘাত হানার পর কয়েক ডজন গ্রামবাসী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া পাকিস্তানি এই গুলিবর্ষণে এক বিএসএফ জওয়ানসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

বিএসএফ বলেছে, পাকিস্তান থেকে গুলি চালানোর ‘কঠোর জবাব’ দিয়েছে তারা। বিএসএফের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আর্নিয়া সেক্টরে বিএসএফ পোস্টে বিনা উস্কানিতে গুলি চালায় পাকিস্তান রেঞ্জার্স। তবে বিএসএফ সৈন্যরা ‘যথাযথভাবে প্রতিশোধ’ নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে টানা তিন ঘণ্টা বিরতিহীনভাবে গোলাগুলি অব্যাহত ছিল বলেও জানিয়েছে বিএসএফ।

এনডিটিভি বলছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সমঝোতার পর আন্তর্জাতিক সীমান্তে গোলাগুলির এই ঘটনা হচ্ছে যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে বড় লঙ্ঘন।

স্থানীয়রা বলছেন, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়। গোলাগুলির সময় উভয় পক্ষ মর্টার বন্দুক ব্যবহার করায় বিকট বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।

রাতভর গোলাগুলির সময় কয়েকটি আবাসিক বাড়িতেও গোলা আঘাত হানে। গোলাগুলিতে অন্তত একটি আবাসিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ব্যাপক গোলাগুলির পর অনেক গ্রামবাসী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। সূত্র : এনডিটিভি


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]