শাপলা চত্বরেই জামায়াত মহাসমাবেশ করবে : ভারপ্রাপ্ত আমির


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 26-10-2023

শাপলা চত্বরেই জামায়াত মহাসমাবেশ করবে : ভারপ্রাপ্ত আমির

 সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আগামী ২৮ অক্টোবর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ করবে জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভার্চুয়াল জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ এই মহাসমাবেশে সুশৃঙ্খলভাবে সমবেত হয়ে এক দফা দাবি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারের কোনো ধরনের উস্কানি, অসাংবিধানিক ও গণতন্ত্র বিরোধী অপতৎপরতায় দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানান জানাই।

সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মী এবং ওলামা-মাশায়েখের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে ২৮ অক্টোবর (শনিবার) রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেয় দলটি।

জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আর মাত্র কিছু দিন পরই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অথচ এখনও নির্বাচনের কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা পূর্ব শর্ত। কিন্তু সরকার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার কোনো চিন্তাই করছে না। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ গোটা জাতি মনে করে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। কারণ এর আগে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো দেশে-বিদেশে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। কিন্তু সরকার গণতন্ত্রকামী মানুষের সে দাবি পাশ কাটিয়ে যেনতেন প্রকারে এক তরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিনা ভোটের সরকার দলীয় বিবেচনায় প্রশাসনকে ঢেলে সাজিয়েছে।

তিনি বলেন, ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কেএম হাসানকে বিএনপির লোক আখ্যা দিয়ে তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলে তিনি আন্দোলন শুরু করেছিলেন যাতে তিনি কেয়ারটেকার সরকার প্রধানের দায়িত্ব নিতে না পারেন। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কখনই সম্ভব নয় দাবি করে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জাতির প্রশ্ন দলীয় লোক বিবেচনায় বিচারপতি কেএম হাসানের অধীনে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে সম্ভব?

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হয়। আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রহসন করে পুনরায় ক্ষমতায় আসে। ২০১৪ সালে মূলত বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৫৩টি আসনে বিনা ভোটে সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। দেশের মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হয়নি। প্রকৃত পক্ষে এটি কোনো নির্বাচন ছিল না।

অধ্যাপক মুজিবুর বলেন, প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীর ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। অথচ জামায়াতে ইসলামীকে সভা-সমাবেশ ও মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের কাছে বারবার লিখিতভাবে আবেদন জানানো সত্ত্বেও প্রশাসন সভা-সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা না করে উল্টো বাধা দিচ্ছে। দেশে যাতে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হয়, সেজন্য আমিরে জামায়াতসহ শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটক করে রেখেছে। এটা জাতির জন্য একটি অশনি সংকেত।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী তার সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী আগামী শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে অবহিত করেছে। পক্ষপাত দুষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।’ পুলিশের দায়িত্ব হলো শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা, বাধা দেওয়া নয়। তার এই বক্তব্য অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক, এখতিয়ার বহির্ভূত ও বেআইনি। পক্ষপাত দুষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পক্ষপাত দুষ্ট ভূমিকা থেকে বের হয়ে আসার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি গুরুতর অসুস্থ অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন তিনি।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]